আজি হতে শত শত বর্ষ আগে,
হে কবি! তুমি লিখেছ কবিতা,
যাহাদের তরে,
শুধু তাহারাই নয়,
আজও মোরা পড়িতেছি,
তোমার কবিতা খানি
কৌতুহল ভরে।


আজও বসন্তের প্রভাতে
রক্তিমা লালিমাতে
পূর্বদিগন্তের সবিতা
হর্ষপূর্ণ নেত্রে চেয়ে বলে,
ভুলেছ কি তাহারে?


যে দিতে চেয়েছে ভাগ,
আনন্দ অনুরাগ,
পুষ্পরেণুর সৌরভ,
বিহঙ্গের গানের অনুভব,
পড়ে তার কবিতা খানি
ভাবিতেছ যাহারে।
আজি হতে শত শত বর্ষ আগে।


কিভাবে ভূলিব হায়,
যে স্মরণ করেছে আমায়,
ভাবিতে তাহার কথা,
অন্তরে লাগে ব্যথা,
কত যে আবেগভরে
তোমার সেই অন্তরে,
রেখেছিলে আমারে।


দখিনা দুয়ার খুলে,
জরাজীর্ণতা ভুলে,
বসে মোর প্রিয়ার সনে,
কবিতা পড়ে মনে মনে
ভাবিতেছি তোমারে।


আজও গাছে ফোটে ফুল
সৌরভে মন হয় আকুল,
পাখির গানের কলি
শ্রবণে হৃদয় খুলি
ইচ্ছে হয় নাচিতে নাচিতে
চলে যাই বাহিরে।


কোকিলের কুহুরব,
পতঙ্গের প্রমোদ উৎসব,
তটিনীর কলকাকলি,
শুকনো পাতার মরমর বুলি,
সবই এসেছে চলি,
সেই সময় শুধু নাহিরে।


হলুদ গাদার বাগান,
দেখে মোর জুড়ায় প্রাণ,
শিমুলের রক্তিম ফুল,
দেখে পাখিরা ও হয় আকুল,
নির্ঝরিনী দুই কুল,
এসবই আছে,
শুধু তুমি নেই, আহারে!


উপরে নীল গগণ
আচ্ছাদিত করেছে ভূবন,
দিবাকরের বিচ্ছুরিত নুর
অনামিশা করেছে দূর,
আলোয় হয়েছে ভরপুর,
অঙ্গ শীতল করি নহরে।


হাজারো পাঠক অদ্য
পড়িয়া তোমার পদ্য
বসিয়া বাতায়নে
গান গায় আনমনে
কল্পনায় গা ভাসিয়ে
ভাবে তোমায় প্রথম প্রহরে।


আমার বসন্ত দিনে
তোমার বসন্ত গান,
গাহিতেছি সবে মোরা
সপে দিয়ে মনপ্রাণ,
তোমার বসন্তের
আনন্দ অভিবাদন,
আজও মোরা শ্রদ্ধাভরে
করিতেছি স্মরণ,
যাহা তুমি পাঠিয়েছ শত অনুরাগে
আজি হতে শত শত বর্ষ আগে।