জানেন ম্যাডাম, আমার মেয়ে পড়াশুনোতে তুখড়,
ফিবছর ফার্স্ট হয় সে, আর গানেও গলা সুস্বর।
শরীরটা সাথ দেয় না, দৌর-ঝাঁপটা ঠিক পারে না,
জানেন, মেয়ে আমার বাংলাটা ঠিক জানে না ।।


ইংরাজীতে ফুল মার্ক্স, এইটটি পারসেনট অঙ্কেতে
নাচ, গান আর ছবি আঁকা, সবই চালায় একসাথে।
ভিডিও গেমেই অভ্যস্ত, বাইরেও যেতে চায় না
শুধু আমার মেয়ের আবার বাংলাটা ঠিক আসে না ।।


পাড়ায় ওর খুব সুখ্যাতি, লোকে সবাই ভালোবাসে,
গর্বিত বাবা – মা আমরা, আনন্দেতে যাই ভেসে।
রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা, ওর নাচ ছাড়া যে চলে না,
সবই পারে, শুধু  বাংলা ভাষাটা বলতে পারে না ।।


মেয়ের আমার কপাল বিরূপ, বাবা বলেন গলা কেশে,
না হলে কেউ জন্ম নেয়, এই পোড়ার মুখো বাংলা দেশে।
অন্য দেশে জন্ম হলে, মেয়ের আমার এতটা কষ্ট হত না,
সবই জানে শুধু বাংলা ভাষাটা লিখতে জানে না ।।      


কি আছে কি শুনি বল, তোমাদের এই বাংলা দেশে ?
সাধে কি আর যায় বিদেশে, সব পড়াশুনোর  শেষে।
বাংলা আজ থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ, হিসাবেই তো আসে না,
তাই, মেয়ে আমার আর ওই বাংলাটা শিখতে চায় না ।।


নাই গর্ব, নেই আর আশা, বাংলা আজ লুপ্তপ্রায় ভাষা,
বাংলা নাকি শুধু তারাই বলে, ওই যারা সব  চাষাভুষা।
বাংলা শুধু এক ঘেয়ে, তাই ইংরাজীর পাশে ঠিক বসে না,
তাইতো আবার মেয়ে আমার, বাংলাটা ভালোবাসে না ।।


বেঙ্গলি ডে টা কবে যেন, মনেও আর ঠিক পড়ে না,    
আমরা, মডার্ন পিপল, ওসবের খোঁজ আর রাখি না।
পরের মাসে মেয়ে পাড়ি দেবে সুদুরে সেই ভিয়েনা,
এই কদিনে, আর তো তার বাংলাটা  শেখা হবে না,

ওখানেই সেটল হবে, এই পোড়া দেশে সে ফিরবে না,  
ভাবি এখন, ছোট্ট থেকে মেয়ে আমার বাংলাটা কেন পারে না ??