কবিবন্ধুরা,  


আমি এই পোস্টটি গত ১৯শে অগাস্ট কবি প্রণব কুসুম দত্তর দেওয়া "প্রেসিডেন্টের চিঠি" পোস্টটির পরিপ্রেক্ষিতে দিলাম।  আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।  কবি প্রণব কুসুম দত্ত কেও অনুরোধ করছি এপাতা একবার ঘুরে যেতে।  


কিন্তু কি নিয়ে আমি লিখব আজকে ?  আমিও এক মহান ব্যক্তির কথা  জানাতে চাই এই আসরে। আসুন  প্রথমে সেই প্রেসিডেন্টের চিঠির কথা একটু স্মরণ করে নিই।  আব্রাহাম লিঙ্কন যখন পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন ঐ চিঠি লিখেছিলেন স্কুলের হেডমাস্টারকে তার নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ সফল ভাবে গড়ে তুলতে । তিনি যদি চাইতেন অনায়াসে নিজের প্রভাব খাটাতে পারতেন।  কিন্তু তিনি তা করেন নি, তার ফলে এই চিঠি বিখ্যাত হয়ে আছে আজ আমাদের কাছে।  চিঠির বিষয়বস্তু আমাদের জানা, তাই আর গভীরে প্রবেশ করলাম না, যারা এখনও জানতে পারেন নি,  তাদেরকে অনুরোধ করছি কবি প্রণবের পোস্টটি একবার পড়ে নিতে।


এইবারে আসি এখনকার সেই মহান ব্যক্তিত্ত্বের কথায়,  তিনিও এক পিতা, সন্তানের মঙ্গল কামনায় সদা চিন্তিত, তিনিও প্রভাবশালী, তিনিও বিখ্যাত হবার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।


তো আমাদের সেই আধা বিখ্যাত ( নেতা ) ব্যক্তিও বোধহয় কবি প্রণবের লেখাটি পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে বা বিখ্যাত হবার বাসনায় নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার জন্য সোজা ফোন লাগিয়ে দিলেন সেই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে, যেখানে তার সন্তানের পরীক্ষার সিট পড়েছে। তিনি দীপ্ত কণ্ঠে অনুরোধ করলেন তার ছেলের পরীক্ষার দিকে যেন বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়, তার কোনও অসুবিধা না হয়, পরীক্ষা হলের সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা যেন বন্ধ থাকে, আর তার সন্তান যেন যেখানে খুশি বসে পরীক্ষা দিতে পারে, চাইলে যার পাশে সে চাইবে তার পাশে যেন তাকে বসতে দেওয়া হয়।  তার সন্তানের পরীক্ষায় যেন কোনও বাধা সৃষ্টি না করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। বিদ্যাদেবীর অশেষ সৌভাগ্য যে এই অনুরোধটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। নাহলে হয়ত একশ বছর পরে এই ঘটনাটিও স্যর আব্রাহাম লিঙ্কনের চিঠির পাশে কোনও মিউজিয়ামে হয়ত চিঠির আকারে জ্বলজ্বল করত।  


কি ভাবছেন, এটা আমার মনগড়া কথা,  আজ্ঞে না, এটি খবরের কাগজের কথা,  অতি সম্প্রতিক খবরে প্রকাশ এই ঘটনা। সেই আব্রাহাম লিঙ্কনের যুগ আর আজ কতো পার্থক্য তাই না বন্ধুরা ।
আজ আমরা কতো উন্নত। সে শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে, মনোবলে ( বাহু ? ) প্ব্রভাবে, সব কিছুতে।  একালের এক প্রভাবশালী পিতা নিজেই নিজের সন্তানের এক অনন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কি সুন্দর ভাবে নিজের হাতে গলা টিপে মারতে উদ্যত হয়েছেন, ভাবা যায় ? হয়ত আরও অনেকে করেছেন, কিন্তু অতি সাম্প্রতিক বলেই এনার কথাটা এখন আমাদের মননে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।


কিছুদিন আগে আমি এক ব্যঙ্গাত্ত্বক কবিতা লিখেছিলাম, "এবার মরলে কবি হব" এখন ভাবছি, আর একটা কবিতা লিখি " এবার মরলে নেতা হব" - কি আপনারা কি বলেন ?  জানার অপেক্ষায় থাকলাম।