দাদাভাই, দিদিভা্‌ই, রোজ অফিসেতে যায়,
যেতে যেতে বারবার, তারা কানে হাত দেয়।  
ছোট ঐ ছেলেমেয়েও, কেন মুঠোফোন পায়,
ইস্কুলে যেতে গেলেও সাথে হেডফোন নেয় ।
মুঠোফোনে সবভালো, দেখ অপার বিস্ময়,
কান থাকে হেডফোনে, চলে গান শুনে চলা।
বাবা-মাও নিরাপদ, সদা নিশ্চিন্ত - নির্ভয়,
হেডফোনে ডুবে থাকে, তাই ও পাড়ার “বলা”।


“বলা” খুব ভালো ছেলে, শুধু গান ভালোবাসে,
হেডফোনে গান শোনে, আর নিজ মনে হাসে।
সকাল, দুপুর, রাত, কানে থাকে হেডফোন,
শোনে নাতো অন্য কথা, আর অন্য কোন জন।
পথে, ঘাটে, বাসে, ট্রামে, যেখানেই থাকে “বলা”,
চোখ দিয়ে শোনে সেও, কানেতে দেয় যে তালা।
পথে, হাটে দেখা হলে, জিগালে শুধুই কয়,
গান শোনা ছুতো নাকি, আসলে চুরির ভয় ।


এইভাবে কেটে যায়, বেশ কয়টি বছর,
আনমনে একদিন, সে রাস্তা পেরোতে গেল।
হেডফোন নিয়ে বলা, তবু ছিল যে নাছড়।
মন ছিল হেডফোনে, আর চোখ ধোঁকা খেল।
পাশ থেকে ধেয়ে আসে, বড় এক “ছোট হাতি”
বলা ভাবে আমি প্রভু, আর গাড়ি ভাবে আমি,
ছুটে এসে জোড়া পায়ে, সে কষাল মুখে লাথি।
দুজনকে দেখে তাই, হাসেন ঐ অন্তর্যামী।  
  
ধাক্কার জোরেতে “বলা”, যেই গঙ্গাপ্রাপ্তি পায়
অকাল মরণে গোটা, পরিবার ভেসে যায় ।।
তুমিও কি আজকাল, হেডফোন কানে দাও?
বলছি শোন ভাইটি, অভ্যাস বদলে নাও।
চোখ, কান খোলা রাখো, পথে ঘাটে বাসে ট্রামে,
জীবন যদি না থাকে, হেডফোন কোন কামে?
তবু যদি রাখো তবে, বুঝে শুনে শোন গান,  
মনে রেখো বাঁধা আছে, বাড়িতে তোমার প্রাণ ।।