কইন্যা কইন্যা কইরা আমি
ছাড়লাম ভবকূল
কইন্যারে ভালো বাইসা
যদি করি ভুল!
ভুল আমার ফুল হইয়া
কইন্যার গাঁয়ে ঝরে,
মাঝ রাইতে চোখখের পানি
টলমলাইয়া পরে।


কেতু গঞ্জের ভীতু কইন্যা
বাপে নৌকার মাঝি,
চলন বলন মাশাল্লা তার
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি।


হালের বলদ পালে থুইতে,
কইন্যার বাড়ি যাইতাম।
মাঝে মইদ্বে মুড়ি দিতো,
পিরাত বইসা খাইতাম।
ঘডি ভইরা জল দিতো
সাথে দিতো পান,
ফিসফিসাইয়া কইতো কন্যা
ধীরে সুস্থে খান।


আমার আবার সুক্কুর সবুর
জমিত নতুন চারা,
মাটির লাহান শক্ত হৃদয়
না জানে মসকরা।
যেই জমিতে প্রেমের বলদ
টানি দিবা রাতি,
মনতো কয় কইন্যা আমার
সাত জনমের সাথী।


রোজ শুক্কুর বার তাঁতি বাড়ি
পুঁথির আসর বইতো,
কইন্যা আমার মাঝে মইদ্বে
পুথি শোনবার যাইতো।
কহনো বা লাইলি মজনু
সুন্দরী কমলা
কহনো বা শিরি ফরহাদ
কহনো বেহুলা।
হোনতে হোনতে পুঁথির কথা
চোখকে আইতো পানি,
কি পিরিত পাঠাইলি বিধি,
করিতে না জানি।
বলিতে না পারি কথা
মন খুলিয়া তারে,
কিনিতে না পারি তারে
পিরিতের বাজারে।
এমনি কইরা বছর যাইতো
আইতো নতুন মাস
মনের আগুন বাড়ায় দিতো
পিরিতের বাতাস।


ভিটি আমার ভাঙা চুড়া
নড়বড় নড়বড় করে,
এই ভিটিতে কেমনে আমি
আনমু কইন্যা ঘরে?
সাহস নিয়া ঢাকা আইলাম,
কাগজ বেচুম ট্রামে,
টাকা পয়সা জমা কইরা
শেষে ফিরমু গ্রামে।


ফিরার সময় শাড়ি কিনলাম
কিনলাম চুরি আয়না,
পান শুপারি সাথে নিলাম
নিলাম সোনার গয়না।
ফিরা হুনি হেই বার ক্ষরায়
বিষ ঢুকছিলো গেরামে
কন্যা আমার মইরা গেছে
বসন্তের বেরামে।
পাগল হইয়া কানতাম আমি
কানতাম দিবা রাতি,
কষ্টে আমার ফাঁইটা যাইতো
চব্বিশ শিকের ছাতি।
মনের কষ্ট মনেই আছে
আছে হাজার স্মৃতি,
কষ্টের কথা কয়জন বুঝে
করিলে বিবৃতি।
মাঝে মইদ্বে মনে পরে
কইন্যার হাসি মুখ,
দোয়া করি কইন্যা আমার
জান্নাত বাসি হোক।


কইন্যা কইন্যা কইরা আমি
ছাড়লাম ভবকূল.....