তোমার মুখচ্ছবি দেখি
মধ্যরাতে জাগা পূর্ণিমার চাঁদে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
শিশু-বক্ষে যখন নাচে আহ্লাদে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
মাঠে প্রান্তরে ক্ষেতে-খামারে, খালে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
জেলেদের পেতে রাখা খরা জালে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বালি-নুড়ি গড়াগড়ি স্বচ্ছ জলে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বিল-ঝিলে প্রস্ফুটিত শতদলে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
উঁচু-নীচু দূর পাহাড়ের গায়
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
গ্রামের দাঁড়ানো তাল গাছটায়।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
আঁধার রাতে তারাভরা আকাশে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
সকালে শিশির ভেজা দূর্বাঘাসে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
ঝুলন্ত বাবুই পাখিদের বাসায়
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
লাঙ্গলে চাষ করে যখন চাষায়।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বাতাসে দুলা কাশবনের ফাঁকে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
গোধূলি বেলায় দূর নদীর বাঁকে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
কিশোরের উড়ন্ত ঘুড়িতে আঁকা
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
কামরায় ঘুরে যখন সিলিং পাখা।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
শরতের ভাসমান শুভ্র মেঘে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
ঘরের দেয়ালে; ঘুম থেকে জেগে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বসন্তে গাছের পাতায় পাতায়
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বাংলার ঐতিহ্য নকশী কাঁথায়।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বর্ষার টপ্ টপ্ বৃষ্টির ফোঁটায়
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
শীতে লাউ, ধুন্দুল ফুলের বোঁটায়।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
আকাশে উড়ন্ত পাখিদের পালে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
গ্রাম্য কিশোরীর টোল পড়া গালে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বাংলার হরিৎ বন জঙ্গল বাগে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
বঙ্গ জলাভূমিতে জন্মানো খাগে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
গ্রীষ্মকালে রঙিন হিজল ফুলে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
ঢেউ কলকল সাগরের কুলে।


তোমার মুখচ্ছবি দেখি
পৎ পৎ লাল-সবুজ পতাকার মাঝে
তোমার মুখচ্ছবি দেখি
আঁকা সবার হৃদয়ে ; তুমি “মা” যে।