মেঘালয়ের পাহাড় চূড়ায় মেঘবতীর বাস
নির্মল বাতাসে অবিরাম নেয় সে শ্বাস।
বর্ষাকালে পাহাড়ের কেশিক বুক, দেয় ধোয়ে
হেমন্তে পাহাড়ের বাহুডোরে থাকে শোয়ে।
বসন্তে ফুলের গন্ধে ,পাখির ডাকে জেগে উঠে
সখীদের নিয়ে মেঘবতী তীর্থস্নানে যায় ছুটে।


সেখানে মেলা বসে খোলা আকাশের তল
পণাতীর্থের জলে নামে পূণ্যার্থীদের ঢল।
পাহাড়ের গা ঘেঁষে নেমে এসেছে যাদুকাটা
যাদুর কাঠির ছোঁয়ায়, সারা অঙ্গে রূপ আঁটা।


মেলায় শতশত মানুষ করে আনাগোনা
শিল্পীর কণ্ঠে মানবতার গান যায় শোনা।
যুবতীরা কেনাকাটা করে নাকে পরে নোলক
যুবক চলে ছুটে বাউল গানে, দিয়ে দোলক।


উঁচু পাহাড়ে করেন বাস, শাহ্ আরেফীন
গুপ্তে বাজান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বীণ।
মেঘবতী পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, গুছিতে গুঁজে
টাঙ্গুয়া বিলের, তাজা রুই মাছ খায় ভেজে।


চৈত্রের খরায়, বৃষ্টির জন্য হয় বেঙের বিয়ে
তরুণতরুণীরা চাল মাগে, কুলা মাথা দিয়ে।
বেঙের বিয়ের নিমন্ত্রণে আসে মেঘবতী
নেচে গেয়ে স্বাগত জানায় যুবক যুবতী।
মেঘবতী একপশলা বৃষ্টিতে, দেয় ভিজিয়ে
তৃষ্ণার্ত ধান, শস্য চারাগাছ, উঠে সব জিয়ে।


রক্তি, পাইকরতলা, নদীর স্বচ্ছ জলরাশি
নাইতে নামে দলবেঁধে শিশু, প্রৌঢ়, ষোড়শী।
চৈত্রে বৌলাই অধিকাংশ শুকিয়ে হয় কাঠ
গবদিপশু চরে, ছেলেরা বানায় খেলার মাঠ।
এসব নদীগুলো মিশেছে গিয়ে সুরমায়
নদী একসুতোয় গাঁথা দৃঢ়বন্ধনে মায়ায়।


আকাশ আঁধার করে আসে কালবৈশাখী ঝড়
ভয়ে মেঘবতীর মন কেঁপে উঠে থরথর।
পাহাড় মেঘবতীকে শুনায়, অভয় বাণী
যতোই আসুক বেগে ঝড়-ঝঁঝা, করবো হানি।