আমি কাঁদতে চাইনি
বিশ্বাস কর আমি কাঁদাতেও চাইনি তোমাকে


তোমাকে হারাবো জেনে যাবার পরে
বাষ্পরূদ্ধ কান্না আমার বুকেতে মেঘ হয়ে জমেছিলো
আমি বুঝতে দেইনি কাউকে।


নক্ষত্রের আলোয় পথ কেটে কেটে কত ছায়াপথ স্বপ্নের
ঘুরেছি আমরা মনে পড়ে যায়.........।।
মনে পড়ে দুর্বাঘাসের মাথায় শিশির বিন্দুতে
তোমার প্রতিফলিত উজ্জ্বলতা-
মনে আসে তোমার সুলোলিত হাসির প্রলম্বিত উচ্ছ্বলতা-
বিদ্যুৎ চমকের মতোই সব চকিতে হানা দেয় মনে।


তারপর অকস্মাৎ বজ্রপাত-
স্বপ্নেরা পুড়ে ছাই
ভস্মের আড়ালে ঢাকে ভবিষ্যৎ।


সুখেরা পালিয়ে যাচ্ছে দেখেও কাঁদিনি আমি
শান্তিরা হারিয়ে যাচ্ছে তাও কাঁদিনি
ফুরিয়ে যাচ্ছে শব্দমালা তাও ......।।


আমি কাঁদতে চাইনি
অক্ষমতার পোষাকে আবৃত আমি দাঁড়িয়েছিলাম
সর্বহারা ভিখারীর মত তোমার শয্যা পাশে-
বন্ধু বিদায়ের দায় কাঁধে নিয়ে যেন
আমার শুণ্য হৃদয়ের রিক্ত বাসরে বেদনার হাওয়া
হাহাকারে বয়ে যায়-----


আমি পাথর চোখে কঠিন সময়কে দেখে যাই
দেখি যেন পৃ্থিবীর শেষ গোধূলীতে
আসন্ন ধ্বংসযজ্ঞের প্রস্তুতি।


তুমি যাচ্ছ চলে-  সব ফেলে
একাকী অনিবার্য যাত্রায়- আকস্মিক।


আমার বুকের বাষ্প কখন জানিনা আমাকে প্রতারণা করে
বর্ষন হয়ে ঝরে অশ্রুতে-
তোমার নিষ্প্রাণ প্রায় সেই চোখের কোন থেকে গড়িয়ে
নশ্বর এ পৃ্থিবীর সূক্ষ্মতম বেদনার মানচিত্রটি
রচিত হল- হাসপাতালের শুভ্র বালিশ-কাভারটিতে।


সত্যি বলছি-
আমি কাঁদতে চাইনি
বিশ্বাস কর আমি কাঁদাতে চাইনি তোমাকে
হাসি হাসি মুখ করে ভেবেছিলাম বলবো
-‘বিদায় নেবার সময় তো আসেনি তোমার!’
হলো না, পারলাম না আমি।


তোমার শেষ অশ্রুবিন্দু যেন অক্ষয় হীরে হয়ে আজও
মনের অন্ধকার কোনে জ্বলছে-
কাঁদছি আমি ........