জীবনের অনেক পথ ঘুরে আমি
শামিল হয়েছি ইবনে বতুতার কাফেলায়
বিংশ শতাব্দীর চোখ দিয়ে পরম বিস্ময়ে
দেখছি সাতশো বছর আগের সভ্যতা।
মরু বন্ধুর পথ পেরিয়ে পৌঁছে যাচ্ছি
অচেনা মরুদ্যানে- নয়তো জৌলুস ভরা প্রাসাদে
কখনো ঠাই মিলছে সরকারী পান্থশালায়।
নগর থেকে নগরে অতিথিবৎসল নাগরিকেরা
আসছে এগিয়ে পর্যটকের সান্নিধ্যে-
জানতে হাল খবর বিশ্বের অন্য প্রান্তের।
ধ্যানী দরবেশের জ্ঞানী বয়ানে ঋদ্ধ হচ্ছেন বতুতা
আমরা দেখছি কারামতের কারিশমা- অবিশ্বাস্য ঘটনাপঞ্জি।


চলছে কাফেলা দেশ থেকে দেশে -জল থেকে স্থলে
যাচ্ছে সাথে ভাগ্য বিড়ম্বিত গোলাম আর কানিজের দল
কেউ কালো, কেউ সাদা, কেউ লাল বা বাদামী
কোন দেশ ,কোন জাতির রক্ত কোথায় বইছে জানেনা কেউ
জানেনা তারা কার দরবারে পেশ হবে উপঢৌকন হয়ে।
এই মানুষেরা হয়তো জানেই না আত্ম পরিচয়-
কেবল দেশান্তরী হওয়া - পণ্যরূপেই গণ্য হওয়া
নেই সংসার-নেই বংশগতি রক্ষার নিশ্চায়তা
হয়তো কোথাও বদলে যাচ্ছে নামটাই -ইচ্ছের দাম নেই
নিয়তি মেনে নিয়ে শৃঙ্খলিত মনে ওরা ব্যস্ত মালিকের আজ্ঞা বইতে।


আমি ওদের নির্বিকার মুখগুলোতে ভাবাবেগ খুঁজে ফিরি
জীবনকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়াই যেন ওদের সার্থকতা।
বিংশ শতাব্দীর এই স্বাধীন চোখ ঝাপসা হয়ে ওঠে আমার
ওদের জন্যে গড়িয়ে পড়া অশ্রুজল নিমিষেই শুষে নেয়-
শত শত বছর আগের শুষ্ক মরুতপ্ত রুক্ষ প্রান্তর।
.........................................................................................................।
কানিজ= দাসী , (১৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে ইবনে বতুতা বাইশ বছর বয়সে তার ভূ-পর্যটন শুরু করেন।)