সিয়েরা লিয়েন-
নীলসাদা জাতিসংঘ আর লাল-সবুজ ব্যান-ব্যাটের পতাকাবাহী
হেলিকপ্টার গানশীপের রোটর ব্লেডের ঘূর্নন থামতেই
কালো মুখগুলোতে ঝকঝকে সাদা দাঁতের হাসি নিয়ে
এগিয়ে এলো একদল গ্রামবাসী
প্রায় সবার হাতেই রঙ-বেরঙের ফুল , গুটি কয় মালা
ব্রিগেডিয়ার জামিল দলবল নিয়ে অগ্রসর হলেন মাঠের মাঝ বরাবর
স্বাস্থ্য বিষয়ক একটা ব্রিফিং- কাল আসছে মেডিকেল টিম।

সেই সুদূর বাংলাদেশ থেকে উড়ে এসে
এই দেশের জন্যে কি না করেছে এই সৈনিকেরা-
রাস্তাঘাট, বাজার, স্কুল, হাসপাতাল, সুপেয় পানির ব্যাবস্থা
সবচেয়ে বড় কাজটা তো করেছে শৃঙ্খলা আনয়নে।
প্রতিদানে ভালোবেসে এদের ভাষাটিকেই
বুকে তুলে নিয়েছে সিয়েরা লিয়েনবাসী
আজ এ দেশের দ্বিতীয় ভাষা বাংলা।


সঙ্গে আসা জাপানী ভাষা বিশেষজ্ঞ বাংলায় দক্ষ কুজিমুরো
ব্রিগেডিয়ারের কনুইতে খোঁচা মেরে সহাস্যে বলছেন-
“ আপনারাই দেখালেন বটে, ভালোবাসায় গড়া কলোনিয়ালিজম।
পৃথিবীতে এ দৃষ্টান্ত আর আছে কিনা কে জানে!”
উৎফুল্ল গ্রামবাসীরা ব্রিফিং শেষে , উপহার নিয়ে জোরাজুরি করছেন
বাসার রান্না , বাগানের ফলমুল, হাতে বানানো ক্রাফটস ......।
প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত কালোমানুষেরা হঠাৎ সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে গেল
গ্রাম প্রধান জানালেন এবার নতুন শেখা এক গান হবে-
বিমুগ্ধ বিস্মিত সৈনিক দলের কানে আধো আধো  বাংলায় গাওয়া
গানটি যেন হাজার বছরের তৃষ্ণায় স্বস্তির জল হয়ে ঝরে পড়ে--
“ আমার সোনার বাংলা , আমি তোমায় ভালবাসি “
চোখ ভিজে আসছে ব্রিগেডিয়ারের,
দলের কেউ কেউ অদৃশ্য বালি খুঁজছে চোখের কোনে
মনে মনে নিজেকে সম্বরণ করছেন দলনেতা-
“ আ সোলজার শ্যুড নট ক্রাই।“
আনন্দাশ্রু মুছে নিয়ে যেতে হবে বহুদূর-
ভেবোনা  সিয়েরা লিয়েন লাল-সবুজ আছে তোমাদের পাশে।