আমরা বড় আনন্দ নিয়েই ভাসতাম
শব্দের সাগরে - তুলে আনতাম
মুক্তোর মতো জ্বলজ্বলে কবিতা -
আমার কবি বন্ধুটির লেখার হাত ছিল বেশ
শব্দ-শৈলীতে মুগ্ধ হতাম আমি-আমরা।
বলতাম, “ লেখা ছাড়বিনা তুই,
অনেক দেয়ার আছে তোর পাঠককে।“
বলতো,“ কবিতা আমার প্রাণ,জীবনের গান ।“
এক সময়--সময় আমাদের আলাদা করে দিল-
খুব মিস করতাম তার বুদ্ধিদীপ্ত লেখনী।

নে

দি

পরে হঠাতই দেখা হয়ে গেল- পাঁচ  তারকা হোটেলের লবিতে
নিপাট স্যুটের নীচে ঝকঝকে স্যু আলো বিকিরণ করছে
আস্তিনের নীচে উঁকি দিচ্ছে প্লাটনাম চেইন- রোলেক্সই হবে হয়তো
শুধালাম-
“কবি কেমন আছো? লেখালেখি চলছে তো?”
--“ নারে,ওসব কাব্য-টাব্য দিয়ে কি আর গাড়ী-বাড়ী ঠিক রাখা যায়?
ওসব তো অলস লোকের কাজ, আমার কি ব্যাস্ততা জানিস না ভাই!”
তার ব্যাস্ততার দীর্ঘ ফিরিস্তি হজম করছি-
নাকে ধাক্কা দিচ্ছে ফরাসি সৌরভ
আমার কাছে তা লাগছে নর্দমার গন্ধের মতো।
আমার হতাশাকে সে ভাবলো বানিজ্যিক দৈন্য
ব্যাবসা উন্নয়নের একগাদা চোরাগুপ্তা টিপস ঢেলে গেল সে-
দমবদ্ধতা থেকে মুক্তি চাইছে মন
আমি জড়িয়ে আছি সৌজন্যের বেড়া জালে-
দেখছি-
মৃত কবির কবরে দাঁড়িয়ে থাকা সচল বানিজ্যিক এপিটাফ।


এক সময় স্বস্তির বাই বাই জানালো সে-
কবির মৃত ছায়াটি পিছনে ফেলে
এক মুনাফাখোর ধনী বনিক
দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে গেলেন
তার শোফার-ড্রিভেন ঝকঝকে লাক্সারী সেডানের দিকে।


//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\//\


[ কবি বন্ধুরা কুন্ঠিত হবার কিছু নেই, কারো স্পর্ধাই নেই আমার সামনে এমন কথা
বলার , এ কল্প-কথা অন্যের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা ।]