তুমিই তো প্রভু পরম করুণাময় , পরম দাতা ,পরম দয়ালু,
তুমিই সর্বশক্তিমান , সূক্ষ্মবিচারক, বিচার দিনের স্বামী
আমি তো কেবল নগণ্য এক ভৃত্য তোমার বিশাল সৃষ্টি মাঝে।


জীবনের সূচনায় কোন এক অজানা কারণে কেঁদে কেঁদেই
এসেছিলাম তোমারই সৃজিত এ ধরণীতে --
আর আজ, আমার এই অনুতাপের অশ্রুধারা প্রবাহিত প্রভু
তোমার করুণা-ধারার অন্বেষণে -
হে মহাপ্রভু , দয়া কর আমায় ।


জীবনের ভরদুপুরে সুখের রোদে স্নান করে বিমোহিত আমি
বিস্মৃত ছিলাম তোমার দানের শোকরে ,
কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদাসীনতা ছিলো সেই প্রহরে ।
দিনান্তের পড়ন্ত রোদে উপলব্ধির উপকূলে দাঁড়িয়ে
আমি ভুলের ঢেউ গুনে গুনে আজ ক্লান্ত।


তবুও বড় আশায় বেঁধেছি বুক -তোমার রহমত থেকে হবো না নিরাশ;
অতিক্ষুদ্র আমার বৃহৎ পাপও তুমিই তো মুছে দিতে পারো পরওয়ারদেগার ।
অপার ক্ষমার আধার তুমি ,আমার শেষ আশ্রয়স্থল --


বিভ্রান্তির ধুম্রকুন্ডলীতে আমি আচ্ছন্ন ছিলাম , হায়!
তোমার নিযুত কোটি সৃষ্টির মাঝে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টির মর্যাদা দিয়েছ তুমি
অথচ শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রাখতে পারিনি আমি --
হীনতার হিমে আমি স্থবির, জড় ছিলাম যেন
তোমার ক্ষমার উত্তাপে আমায় প্রাণ দাও প্রভু --
ভক্তির ভগ্নাংশ নিয়ে ভঙ্গুর মনে অপূর্ণ প্রার্থনা করে গেছি বার বার
তুমি সহ্য করে গেছ তাও --মহান হে দয়ালু প্রভু আমার ।


নশ্বরের আকর্ষণে অবিনশ্বর আত্মা আমার আত্মবিস্মৃত হয়েছে
হয়েছে দিকভ্রান্ত, তোমার অবাধ্য, সর্বস্বান্ত।
অহংবোধের ব্যাধিতে আক্রান্ত মন আহত করেছে তোমার কতো সৃষ্টিকে --
ভোগের বন্যা-বেগে ত্যাগের মহিমা গেছে ভেসে--
বড় আশা নিয়ে গড়েছ আমায় , আমি ব্যর্থ কৃতজ্ঞতা প্রকাশে।
ধূলিকণা নয় , জড়-পদার্থ নয়, নয় বৃক্ষ-লতা কি বন্যপ্রাণী
দিয়েছো মানুষেরই শরীর প্রাণ --তোমার অকল্পনীয় দান ।


গ্যালাক্সির পর গ্যালাক্সির বিস্তার মাঝে একটি গ্রহের
একটি ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র প্রাণ আমি --দিয়েছো স্বাধীন সত্তা --
দ্যাখো প্রভু , আমি সব কিছু ছেড়ে শুধু তোমারই করুণা পেতে
এসেছি আজ করজোড়ে---
তোমার প্রিয় নবীর উম্মত আমরা
তাঁর প্রদর্শিত পথেই পেয়েছি তোমার ক্ষমা লাভের যা কিছু সাহস
জানি , প্রত্যর্পণ করতে হবে তোমারই কাছে একদিন
কোন মুখে যাবো বল খালি হাত নিয়ে ?


আমাকে শক্তি দাও শান্তি পথে চলার
আমাকে ক্ষমতা দাও পুণ্য পাথেয় করার
পৃথিবীর সব মানুষ তো তোমারই মুখাপেক্ষী প্রভু
সফল সৃষ্টি হওয়ার জ্ঞানের আলোটুকু আমাদের দাও।