কোন এক মৃত নগরীর এবড়ো থেবড়ো বদ্ধ গলিতে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে
আমি নিস্তব্ধতার আর্তনাদ শুনি আনমনে
সময়ের এই শ্মশানে , অতীত শুধু হাতছানি দিয়ে ডাকে
বলার আছে যেন তার কতো না কথা --
সভ্যতার উচ্ছিষ্ট হয়ে, কতকাল রোদ সয়ে, জ্যোৎস্না শুষে,  
বৃষ্টি ধোয়া, বাতাস ছোঁয়া হয়ে হয়ে বিশাল এক ভগ্নস্তুপ
এখনো তার অস্তিত্ব নিয়ে আছে, বিস্ময় জাগাতে ।
ভগ্ন স্তম্ভগুলোর কারাগারে যেন বন্দী লুপ্ত ইতিহাস
একদা জৌলুসের জলসাঘরে আজ জঙ্গলের জাঁকজমক,
প্রত্নতাত্ত্বিকের তত্ত্বতালাশে উদ্ঘাটিত গৌরবের দীর্ঘশ্বাস
আমার কানে হারানো দিনের কান্না ধ্বনি হয়ে বাজে।
যত্নে গাঁথা ইটের দেয়াল থেকে খসে গেছে মসৃণ পলেস্তরা
এক সময়ের সুখি গৃহকোণ এখন  পূতিগন্ধময় চামচিকের আসর।
সময়ের কাছে পরাজিত দালানকোঠার লজ্জা যেন
ঢেকে রাখতে চাইছে লতাগুল্ম আর শ্যাওলার স্তর—
চাপ চাপ অন্ধকার চারপাশে যেন মৃত্যুর ছায়া হয়ে জমে আছে ।
গিরগিটির গর্বিত গমনাগমন , সাপেদের নিশ্চিন্ত চলাচল,
বলে দেয় যে এখানে মানুষের উপস্থিতি অবাঞ্চিত।
পাল্লাবিহীন ,ভগ্ন গরাদের উম্মুক্ত দরজা-জানালা দিয়ে
উদাসীন বাতাস হাহাকার নিয়ে আসে যায়,
শুধু দু’এক জায়গায় ,সময়কে জয় করা সিরামিক মুরালের
ছিন্ন অংশ বিষন্ন রোদে ম্লান হাসির ঝিলিক ছড়ায় ---


এ মৃত শহর আমার বেশ চেনা চেনা লাগে---
তুমি স্মৃতি হয়ে গেছো সেই সে কবে.........।।
আমার মনের শহরটা যে সেই থেকে এমনই
এক মৃত নগরীর ধ্বংসস্তূপ হয়ে আছে ।