পত্রশূন্য বৃক্ষরাজি যখন রিক্ত শাখা নিয়ে মৃতবৎ দাঁড়িয়ে
শুকনো পাতার পাঁজর ভাঙ্গার মূহুর্মূহু শব্দে যখন হাঁটাপথ সচকিত
কুয়াশার চাদরে দৃষ্টি সীমা যখন গণ্ডীবদ্ধ
ভারী পোশাকের আড়ালে যখন মানুষকেই চেনা দুষ্কর
বোঝা যায় তখন শীত এসে গেছে --বেশ জাঁকিয়ে বসতেই।


অতিথি পাখীর আগমনে ,কোলাহলে, নির্জীব বিলগুলো এখন সজীব
খেজুর গাছের মাথায় মাথায় ঝুলছে নতুন মাটির কলসী ;
গ্রীষ্মের সূর্যকে যারা অসহনীয় জ্ঞান করেছিলো
তারাই শীতের সূর্যটাকে আহ্বান করে একটু উষ্ণতার আশায়  
নরম রোদ গায়ে মেখে পথে নামার আনন্দই আলাদা !
খাল-বিল -নদীর পানি কমে পেয়েছে অচেনা আলাদা রূপ
মাছ ধরার আয়োজনে বেড়ে চলে উৎসুকের ঢল
নিস্তেজ প্রকৃতিতে মানুষের চাঞ্চল্য গেছে বেড়ে-
বেলা পড়ে এলেই কিন্তু সব শীতের দখলে --
সবাইকে যেন সে তাড়িয়ে বেড়ায় গৃহ অভিমুখে ।
শীতের প্রাবল্য থেকে রেহাই পেতে অগ্নিকুন্ডলী জ্বালিয়ে বসে শীতার্তরা
বাড়ি বাড়ি নর-নারী ব্যস্ত পিঠার আয়োজনে--
কাঁথা -কম্বল ,চাদরমুড়ি দিয়ে গল্প আসর উঠেছে কোথাও জমে।


এমন শীত উপভোগ্য শুধু তাদেরই--
যাদের উষ্ণ গৃহকোণ আছে
আছে লেপ-কম্বলের ওমে ঢুকে পড়ার সামর্থ্য।
এই মানচিত্রেই কোথাও কোথাও গৃহহীন মানব সন্তান
শীতের সাথে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত--
তাদেরই কেউ কেউ শৈতপ্রাবল্য সহ্য করতে না পেরে
চলে যায় মৃত্যুর কোলে -
শুধু খবরের কাগজের এক কোণে ‘মৃত্যু সংবাদ ‘ হয়ে।


আমাদের উদাসীনতা --নির্দয়তাকেই যেন প্রকট করে এই শীত
আমার হৃদয়ের উষ্ণতা জড়াক না এই শীতে
বস্ত্রহীনের শীতের ওম হয়ে ।