আমি কি এক শুষ্ক পাতা—ঝরা রঙে মোড়া,
যে গাছের ডালে লেগে থাকি,
তবুও ছিন্ন, একা, হারা।
চারপাশে নাকি ঋতুর উৎসব,
কিন্তু আমার ভেতরে কেবলই শীত,
কেবলই স্তব্ধ ভাঙাচোরা রোদ্দুরের উৎসব।
লোকালয়ে মুখোশধারী মুখ,
তাদের হাসি যেন জলের প্রতিচ্ছবি—
ছুঁতে গেলেই ভেঙে যায় দুখ্দুখ্।
কারও কাছে আমি নেই,
কারও কাছে আমার নাম নেই,
আমি যেন এক নির্জন বাঁশির সুর—শুধু বাতাসে বাজি, শ্রোতা নেই।
দিনগুলো কাগজের মতো শুকনো,
আলমারির কোণে গুঁজে রাখা ফাইলের মতোন—
উপেক্ষিত, বিস্মৃত, অপ্রয়োজনীয়।
কাজের পাহাড় বুকে চেপে বসে,
কিন্তু মন?
সে তো উড়ে যেতে চায় দূর কোনো নীল মেঘের দেশে।
ভেতরটা গলতে থাকে মোমের মতো ধীরে ধীরে,
কেউ জানে না এই পোড়া গন্ধের অর্থ,
কেউ বোঝে না রাতের ঘুমহীন নদী বয়ে চলে কীরে।
আমি কথা বলি না—
শব্দেরা আমার ঠোঁট ছুঁয়ে মরে যায়,
তারা ফিরে যায় বিষণ্ন এক শূন্যতার গায়ে।
আলোর নিচে দাঁড়িয়ে আমি—
তবু ছায়া নেই,
নিজেকেই খুঁজি প্রতিচ্ছবিতে,
দেখি—সেখানে তো আমি নেই!
যেন কেউ ভিতর থেকে চুপিচুপি আমায় মুছে দিচ্ছে,
আঁধারের রঙে আঁকছে
নিখুঁত এক অন্তর্হানির রেখা।
তবু কোথাও, হয়তো অন্তরালের আকাশে,
একটি তারা কাঁপে—
যে এখনো নিভেনি, হারায়নি আশ্বাসে।
আমি অপেক্ষা করি…
কোনো এক আগামীর,
যেখানে আমি ফিরে পাবো নিজেকে,
একটু আলো, একটু “তুমি” কিংবা—
একটি গভীর স্বপ্নের তীরে।
মে ৪, ২০২৫ রাত ১১টা
মিরপুর, ঢাকা