আলোচনা ৭৬


কথায় বলে ‘নগদ যা পাও, হাত পেতে নাও, বাকীর খাতা শুন্য”, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু” কিংবা ‘রাজ হাঁস এবং ডিমের গল্প” এবং কচ্ছপের গল্প আমরা সবাই জানি, কবি গোলাম রহমান অনেকটা সেরকমই বলতে চেয়েছেন  তার “লাল মুলা চিবাই” কবিতায়। কিছু মানুষের স্বভা্ব, খুব দ্রুতই সব পেতে চায়, ধিরে ধীরে এবং দীর্ঘ দিন তারা কোন কিছুই চায় না বা উপভোগ করতে চায় না ফলে অনেক সময় নগদে অনেক বেশী কিছু পেলেও তার স্থায়িত্ব খুব কম হয়। কোন এক সময় হয়তো আফসোসে মরে কিন্তু তখন আর সময় থাকে না।


কবিতায়, কোন এক কৃষকের গল্প নিয়েই দিয়েই পুরো কাব্য রচনা করেছেন কিন্তু একটা সামগ্রিক জাতীয় চরিত্রের সফল রূপাইয়ন করেছেন বেশ দক্ষতার সাথে। তার কবিতা প্রকাশের পাতায় বেশ কয়েকজন কবি চমৎকার সব মন্তব্য করেছেন, যেমন-


কবি খলিলুর রহমান এর মন্তব্য-
যে জীবন হারিয়েছে তুচ্ছের পিছে
উচ্চকে না পাওয়ার কান্না তার মিছে।
বেলাশেষে বৃথা তবু কেঁদে মরে হৃদয়
রঙিন আলোর উপহাসে কেটে যায় সময়।


কবি সহিদুল হক এর মন্তব্যঃ
কাল যে গেল সবজি চাষে
ফুলের মর্ম বুঝিনি
এখন বসে মুলা চিবাই-
কেন সুবাস খুঁজিনি!


এত সব চমৎকার মন্তব্যের পর আর আলোচনার তেমন কিছু বাকি থাকে না, শুধু বলতে পারি, কৃষক সারা বছর ফুলের আবাদ করে যেভাবে লাভবান হতে পারতেন, কিন্তু মউসুমি ফসল আবাদ করে তাৎক্ষনিক ভাবে অনেক বেশী লাভবান হয়েছেন হয়তো (মৌসুমি ফসলের দাম বেশী হওয়ার কারনে) কিন্তু স্থায়ী লাভ হারিয়েছেন চিরতরে। এখানে কৃষক ভুল করেছেন হয়তো কিন্তু মাটির উর্বরতায় যে মুগ্ধপ্রান পুরুষ তাকে অকল্যাণকর উপদেশ দিলেন, তাকেই আমি জাতীয় চরিত্র রূপে আখ্যা দিচ্ছি। আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ সব সময় আছে এবং থাকবে যারা কোন সময়েই অন্যের ভাল সহ্য করতে পারে না, ঈর্ষা তাদের অস্থির করে তোলে, মানুষের অপকারই যেন তাদের ধ্যান ধারনা। কবিতায় সকল কবিই কোন না কোন বার্তা প্রদান করে থাকেন, এখানেও তাই করেছেন


কবির জন্য রইলো অভিনন্দন, খুব সুন্দর একটি বিষয় নির্বাচন করার জন্য।