আলোচনা ৭২


কবিতার শিরোনাম “লাশ নিবেন লাশ”? সভ্যতার কি এক বীভৎসতা!! একজন কবিকে কেন এমন একটি শিরোনাম দিয়ে কবিতা লিখতে হয়? কে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর? কবিতাটি পড়ার পর কি বিদ্রোহে জ্বলে উঠবো নাকি কান্নায় ভেঙ্গে পরবো? নাকি অসভ্যতা থেকে পালাবো? কোন এক অসভ্য সমাজে বসবাস করছি আমারা, যেখানে লাশ বিক্রি হয়?


বাংলাদেশে গত কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনার (নিরাপদ সড়কের দাবীতে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের, শিশুদের রাজপথে আন্দোলন)  প্রেক্ষিতে আপামর জনসাধারণের মন কেঁদে উঠেছিল, বিদ্রোহে জ্বলে উঠেছিল আবার অসহায়ত্বের মোড়কে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল, কবি’র মানবিক সত্ত্বা জনসাধারণের মতই আঁতকে উঠেছিল , তাই কলমে উঠে এসেছে এরকম এক বীভৎস কবিতার শিরোনাম। কবি বিপুল চন্দ রচনা করলেন “লাশ নিবেন লাশ”?


স্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মানুষ একদিন লাশ হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে, প্রকৃতির এ চিরন্তন সত্যের সাথে  আমাদের কোন দ্বন্দ্ব নেই, কোন আপোষ নেই, কোন ক্ষোভ কিংবা হতাশাও নেই। জগতের সকল প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, এ সত্য আমরা মেনেই নিয়েছি কিন্তু অপমৃত্যু, অকালে মৃত্যু, নৃশংস ভাবে মৃত্যু, মানুষের হাতে মানুষের মৃত্যু, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় মৃত্যু, গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু, মানুষ রুপী জানোয়ার দ্বারা ধর্ষিত হয়ে মৃত্যু...... কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।  এ যেন, মানবতার অপমান, সভ্যতার মুখে থু থু দেয়া, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।


কবি ঘৃণায়, অপমানে, বিদ্রোহে এবং অসহায়ত্বের এক মিশ্র অনুভূতি নিয়ে শেষ করেছেন- “উন্মুক্ত আজ লাশের বাজার,বিক্রেতা তাই হাজার হাজার!লাশ নিবেন লাশ”? সমসাময়িক প্রেক্ষিতে চমৎকার এক কাব্য উপহার দিয়েছেন, কবির জন্য রইলো অভিনন্দন আর একরাশ সংগ্রামী শুভেচ্ছা।