আলোচনা ১১২


সামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের approach শিখেছি, Top-Down Approach, Bottom-Up Approach, Participatory Approach এবং সর্বশেষ সংযোজন হল  Rights Based Approach (RBA)। অধিকারের নানারূপ আমরা নানাভাবে ব্যাখা করি, মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার আবার অধিকার ভিত্তিক কার্যক্রম ইত্যাদি।  প্রায় দুই দশক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করতে করতে সবচেয়ে বেশী শিখেছি, নুতন বোতলে পুরাতন মদ কিভাবে উপস্থাপন করতে হয়।  UDHR (Universal Declaration of  Human Rights) যে কথা বলে RBA (Rights Based Approach) সেই একই কথা বলে ভিন্নভাবে, ভিন্ন ফর্মুলা দিয়ে।  আবার ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম সেই একই কথা বলে, ১৪০০ বছর আগে ইসলাম সেই একই কথা বলে দিয়েছে পরিষ্কার ভাবে। কিন্তু আমরা আধুনিকতার নামে ধর্মের বিরোধিতা করি আবার সেই একই বানী নিজের মত করে ব্যাখা করি নানা নামে, নানা বোতলে।


কবি মোঃ আব্দুল হাফিজ তার কাব্য ‘অধিকার’ এ মানুষের মৌলিক অধিকারকেই আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।  মানুষের মাঝেই আল্লাহ বসবাস করে, মানুষের সেবা করলেই আল্লাহকে সেবা করা হবে, মানুষের দুর্দশায় সাহায্য করলে, তার সেবা করলেই আল্লাহকে পাওয়া যাবে। ইসলাম ধর্মে অসংখ্যবার পাড়াপ্রতিবেশীকে, অনাথকে, দরিদ্র্যকে, অভাবগ্রস্থকে সাহায্য করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। (বোধকরি অন্যান্য ধর্মের মুল বানীও একই)।  মানবাধিকার কিংবা আরবিএ তেও তাই বলা হয়। খাদ্য ,বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা মানুষের  মৌলিক মানবাধিকার (যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে এগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি, সবচেয়ে বেশী অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে)।


বিশ্বের ১৯৫দেশের স্বাক্ষরিত যে চুক্তি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ (ইউডিএইচআর) সেখানেও ধনী, দরিদ্র, ধর্ম, জাত, বয়স, জেন্ডার … নির্বিশেষে মানুষের এই চাহিদা পূরণ করার কথা বলে হয়েছে এবং সকল দেশের রাষ্ট্র প্রধান এগুলো পুরন করার জন্য অঙ্গিকারবদ্ধ।  কবি সেই কথাগুলোই তার কাব্য তুলে ধরেছেন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে।  মানুষের মৌলিক অধিকার পুরনে সাহায্য করা কোনভাবেই করুণা পর্যায়ে পরবে না বরং সেগুলো তার জন্মগত অধিকার হিসেবেই স্বীকৃত।  
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা।