আলোচনা ৮০


মানব গুণের অন্যতম দুটি উপাদান “আবেগ’ এবং ‘বিবেক’ নিয়ে কবি মোঃ রোকন আহমেদ তার কাব্য ‘আবেগ ও বিবেক’এ চমৎকার যুক্তি উপস্থাপন করেছেন এবং এ দুটো গুণের সমন্বয় হীনতার উপর জোর দিয়েছেন। কবিতাটি পড়ার পর পরই আমার মত অনেক পাঠকের মনেই হয়তো কিছু প্রশ্ন জন্ম নিবে, আবেগ থাকলেই কি বিবেক জাগ্রত হয়? বিবেক ছাড়া কি মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়া যায়? শুধু আবেগ দিয়ে কতটুকু কল্যান বয়ে আনা সম্ভব? আমাদের চাওয়া পাওয়া এবং ভাবনাগুলো যেভাবে ‘আবেগ এবং বিবেক’কে নিয়ে ভাবায়, বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলে। কবি আদর্শ এবং বাস্তবতার অমিল গুলোই চিত্ররায়িত করেছেন কবিতায়।


একজন মানুষ কোন একটি করুণ গল্প কিংবা বক্তৃতা শুনে আবেগে গদগদ হয়ে পরতে পারেন, কান্নায় ভেঙ্গে পরতে পারেন কিন্ত সেই একই মানুষ হয়তো, একই গল্পের চরিত্রটি উপস্থিত হয়ে যখন তার কাছে সাহায্যের হাত বাড়ায় তখন আর তিনি আবেগ তাড়িত হয়ে পরেন না। আবেগের প্রায়োগিক রুপায়ন সম্ভব হয় যদি আবেগের সাথে বিবেক কাজ করে অন্যথায়, তাত্ত্বিক ভাবে আবেগ দ্বারা তাড়িত হয়ে কেবল হাত তালি কুড়নো হবে, মানব কল্যান কিছুই হবে না।  সেই অর্থে আবেগের জোরালো ভিত্তি হল হোলতাত্ত্বিক আর বিবেকের ভিত্তি হোল প্রায়োগিক। আবার দুটোর সম্মেলনে মানব কল্যান।


কবি দেখিয়েছেন, ডায়াসের বক্তব্য শুনে চোখে অশ্রু এসেছে, অঝোর ধারায় কান্নাও এসেছে কিন্তু ক্ষুধার্ত ব্যক্তির বাড়িয়ে দেয়া হাত বিরক্তি তৈরি করেছে। তাই কবি যথার্থই বলেছেন “মানুষের আবেগ বোকার মত, সে কিছুই করতে পারেনা,শুধু শুনে,আর চোখে অশ্রু ফেলে”, অন্যদিকে “মানুয়ের বিবেক হতে পারে আদালতের মত, সে অনেক কিছু করতে পারে, যদি তার মানুষ্যত্ব থাকে”।


অসাধারণ এক বক্তব্য ধারণ করেছে খুব অল্প কথার এই কবিতায়। কবির জন্য রইলো অভিনন্দন, খুব সুন্দর একটি বিষয় নির্বাচন করার জন্য।