আলোচনা  ১৬৮


সংসার আসলেই এক আজব জায়গা, নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর, সেটা পজেটিভ অর্থে আবার নেগেটিভ অর্থেও হতে পারে। কবি আফরিনা নাজনীন মিলি, তার কাব্য “সংসার মানে”তে খুব অল্প কথায় সংসারের এক সামগ্রিক চিত্রায়ন করেছেন বেশ গোছালো ভাবে।


কবিতাটি পড়তে পড়তে, একটি সংসার নামক সুখের/দুঃখের/আহলাদের/যন্ত্রনার চিত্র ফুটে উঠছিলো চোখের সামনে। এখানে নানা চরিত্রের মানুষ একত্রে বসবাস করে, নানা মত, নানা বিরোধ, নানা রকম মতবিরোধ, নানা রকম মানুষিকতা আর নিজ নিজ দর্শন, তার পরও এক সাথেই থাকা হয় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই চলছে। পৃথিবীতে একমাত্র “পরিবার”ই সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। দেশে দেশে তার কিছু ভিন্নতা আছে, সংস্কৃতি ভিন্নতায় আছে পরিবার পরিচালনার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি, যুগের হাওয়ায় পরিবার কাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে বটে কিন্তু দিন শেষে সেই আদি কনসেপ্ট “পরিবার” সেটা রয়েই যায়। মাঝে মাঝে ভাবতে বেশ অবাক লাগে, কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানটি এতোকাল ধরে টিকে আছে, এতো ভিন্নতা, এতো মতোবিরোধ থাকার পরও। কবি সে কথাই বলেছেন তার কাব্যে।


সংসার টিকে থাকার বেশ কিছু মূল সূত্র আছে, যেমন-মেনে নেয়া এবং মনে নেয়া। কখনো কখনো মনে নিতে না পারলেও মেনে নিতে হয়। সব সময় মনে নেয়া যাবে না, এখানে নানা মতের মানুষ থাকে ফলে সব সময় “মনে নেয়া” কোন কার্যকরী ফল দিবে না। আবার সব সময় মেনে নিতে থাকলে, নিজের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে ফলে কোন কোন সময় “মনে নেয়া’র উপর জোর দিতে হবে। কবি আরো কিছু বলেছেন-


কেউ যায় কয়ে, কেউ যায় সয়ে অর্থাৎ কেউ বলতে থাকলে অন্যকে চুপ করে সয়ে যেতে হয়, কখনো কেউ প্রতিবাদ করে ফলে নানা রকমের ঝামেলা তৈরি হয় তখন আবার কাউকে “বাধ দিতে” হয়। নদীর পানির জোয়ারে সব ভেসে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য যেমন বাধ দেয়া হয়, তেমনি পরিবার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য “বাধ দেয়ার” দরকার হয় ।


যদিও অল্প কথার কাব্য কিন্তু বেশ কিছু মূল সূত্র কবি উপস্থাপন করেছেন, “ মানে” এই ভালো লাগা, মন্দ লাগা সংসারের জন্য, সংসারকে টিকিয়ে রাখার জন্য।


কবির জন্য রইলো অফুরন্ত শুভেচ্ছা।