ঢাকের তালে চারটে দিন সবার কোমোর দুলেছে,
মা দুগ্গা কৈলাশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে,
স্কুল অফিস গুলো একে একে খুলে যাচ্ছে-
প্রকৃতি হালকা হেমন্তের আমেজে সেজে উঠছে।
কিন্তু যাদের জন্য আমরা এই চার দিন,
ঢাকের সাথে নাচলাম তা ধিন-ধিন-ধিন!
তারা এরপর তো হয়ে গেল কর্মহীন।
সারা বছরে তাদের খবর কেও নেয় কি কোনদিন?
ঢাকি ওয়ালার ছোট্টো ছেলেটা-মহাআনন্দে কা‍ঁশি বাজাই ঢাকের সাথে,
হেঁটে হেঁটে হাওড়া আসে কলকাতা থেকে হাতটি রেখে বাবার হাতে;
কারন তাদের যে ফিরতে হবে নিজের গ্রামে-বিকেলের রেল গাড়িতে।
রেল গাড়ির কামড়ায় বসে ছোট্টো বালক গভীর চিন্তায় মাতে,
মনে মনে ভাবে চার দিন তো ভালোই কাটে!
ঘুরতে পাই-নতুন নতুন জামা পাই-মন্ডা মিঠাই পাই পাতে!
দুগ্গা মায়ের এত কিসের তারা-যে আজই চলে যেতেই হবে?
কাল থেকে তো আবার সেই শুকনো ভাত একটু ফ্যানের সাথে!
আমার কপালে তো তবু এটুকু হলেও জোটে-
মায়ের প্রায় দিনই কেটে যায় আধপেটা খেয়ে।
সব লোকে বলে জগত মাতা সবার দুগ্গা তুমি,
দেখো পেটভরে খাবার জানো পাই মোর মা জননী!
রাখলে এই প্রার্থনা-তোমার কাছে থাকব মা গো আমি চির ঋণী।
আমার কাছে পুজো মনে পেট পুরো খাওয়া,
আমার কাছে পুজো মানে বাবার মুখে একটু খুশীর ছোঁয়া,
আমার কাছে পুজো মানে মায়ের নতুন শাড়ী পাওয়া,
আমার কাছে পুজো মানে এই কলকাতা ঘুরে দেখা।
অবশেষে আমার একটা মনের কথাটি বলে যাই,
একডালিয়া-চেতলা-শিয়ালদহ-শ্রীভূমি সবারই ঢাকি কে চাই,
সারা পুজোই সবাই কে সুরের আনন্দ দিয়ে বেড়ায়,
আর আমাদের এই ক্ষুধার রাজ্যে সুর খুঁজে না পাই!
চার দিনের শেষে এই আনন্দ গুলো জীবন থেকে হারিয়ে যায়!
তাইতো অপেক্ষা করি একটি বছর এই চারটি দিনের প্রতীক্ষায়।।