রক্তে ভিজে থাকা প্রভাতের শীতল বাতাস,
যেন শহীদদের আর্তনাদের নিঃশ্বাস।
বাংলার কালো মাটির বুকে লাল রক্তের শপথ,
শহীদের নিথর দেহে জেগে ওঠা ভাষার অহংকার।
ইতিহাসের শিলালিপিতে খোদাই করা প্রতিটি আর্তনাদ আজও প্রতিধ্বনিত হয় বাতাসে,
প্রতিটি শব্দ যেন শাণিত তলোয়ার!
ছিন্ন করে দেয় নিপীড়কের দুর্জয় শৃঙ্খল।

একুশ মানে বুলেটবিদ্ধ স্বপ্নের লাশ,
একুশ মানে মায়ের কালো শাড়ির প্রান্তদেশে লুকিয়ে থাকা নির্বাক কান্না।
একুশ মানে সংগ্রামের অনল,
যে অনলে পুড়েছিল শাসকের নির্মমতা,
জ্বলেছিল অত্যাচারের প্রাচীর।

শহীদ মিনারের স্তম্ভে আজও সেই লাল রক্তের স্মৃতি,
প্রতিটি স্তরে স্তরে গেঁথে আছে একেকটি নাম—
সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার…
তাদের আত্মাহুতিতে আমরা পেয়েছি ভাষার স্বাধীনতা,
পেয়েছি উচ্চারণের অধিকার।

আমি কি ভুলতে পারি সেই একুশে ফেব্রুয়ারি?
আমি কি বিস্মৃত হতে পারি সেই মা-বোনের আর্তচিৎকার?
আমি কি পারি মুছে ফেলতে রক্তাক্ত স্মৃতির চিহ্ন?

না, একুশ আমার শিরায় শিরায় প্রবাহিত,
একুশ আমার চেতনার দীপশিখা,
একুশ আমার ভাষার আত্মপরিচয়।
যতদিন বাংলা বেঁচে থাকবে,
যতদিন মুক্ত আকাশে উড়বে স্বাধীনতার নিশান,
একুশ ততদিন থাকবে অমলিন, অনিঃশেষ, অনড়!

========