প্রথম দ্রষ্টব্যেই হৃদয় যেন পতিত হয়েছিল এক অদ্বিতীয় মোহাবিষ্টতায়,
যেখানে তোমার দৃষ্টির নৈঃশব্দ্যে আবিষ্কার করেছিলাম এক অলৌকিক অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি।
স্মৃতির শিলালিপিতে সেই মুহূর্তেই খোদাই করে নিয়েছিলাম তোমার নাম,
যেন সত্তার অন্তঃস্থ নিঃশব্দ অভিজ্ঞান।
তোমার সান্নিধ্যে প্রতিটি ক্ষণ হয়ে উঠেছিল একেকটি ব্যতিক্রমী বোধের উৎসার,
যেখানে জীবনের নিরাবরণ অর্থ ধরা দিয়েছিল আত্মার স্বরবিন্দুতে।
করস্পর্শের সেই সূক্ষ্মতায় যেন বিশ্বচরাচর পুনর্গঠিত হয়েছিল;
সমস্ত অবিশ্বাস ভেঙে নিঃশর্ত আস্থার অর্ঘ্য উৎসর্গ করেছিলাম তোমার চরণে।
তোমার দিকে প্রথমবার তাকিয়ে মনে হয়েছিল,
অনন্ত মহাবিশ্বের রঙ-বর্ণ, আলো-ছায়া ও গন্ধ—
যেন এক অদ্ভুত সমবেততায় এসে ঠেকেছে তোমার মুখচ্ছবিতে।
সেই চাহনির প্রতিসরণে অন্তর্জগৎ হয়েছিল বিপর্যস্ত, অথচ আশ্চর্যভাবে পূর্ণ।
তোমার স্মৃতিসমূহ আজও সংরক্ষিত রয়েছে হৃদয়ের গোপন অভিজ্ঞানখণ্ডে!
যেন বিবর্ণ চিঠির পাতায় রক্ষিত শুকনো পাপড়ি,
যার সুগন্ধ আজ উগ্রতা হারালেও স্মৃতির পবিত্রতায় অমলিন।
তোমার সান্নিধ্যে যে প্রেমের স্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠেছিল, তার কোনো প্রাপ্তির হিসাব ছিল না,
ছিল কেবল এক নিষ্কলুষ সমর্পণ।
তবু তুমি ছদ্মবেশী ছলনার চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে—
সেই প্রেমের ঘরকে ধ্বংস করে দিলে।
যে বিশ্বাসে নির্মাণ করেছিলাম আত্মার বাসস্থান,
তা এক নিমিষেই ভেঙে গেল ছিন্নমূল আশার মতো।
তুমি চলে গেলে—নিঃশব্দে, নির্বাকভাবে;
আর আমি এক নির্বাসিত প্রেমিকের মতো রয়ে গেলাম, উজাড় করে দেওয়া ভালোবাসার ধ্বংসস্তূপের পাশে শূন্যদৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে।
==========