নগরের নিস্পন্দ নৈশবেলায় নীলাভ আকাশের আঁচড়ে মিশে থাকে উজ্জ্বল বিস্মৃত দীপ্তি।
কাচঘেরা জানালার অন্তরাল থেকে জগৎকে অবলোকন করলে মনে হয়,
সময় যেন স্থবিরতার এক অবিনাশী খাঁচায় আবদ্ধ।
শব্দহীন বাতাস, অবচেতন পাতার কাঁপুনি,
আর দূরাগত রেলপথের শ্রুতিরহিত ধ্বনি—
সবই আজ এক অপার্থিব নিস্তব্ধতার উপাখ্যান।
এই নিঃশব্দতা কেবল অচল সময়ের বিমূর্ত ছায়া নয়,
এ এক অদৃশ্য প্রেতচ্ছায়ার মতো টেনে নিয়ে যায় মনোজগতের সুদূর অলিন্দে!
যেখানে অতীতের সোনালি বিকেলগুলো দোদুল্যমান। স্মৃতির পর্দায় ঝিলমিল করে সেই প্রাতঃস্মরণীয় বিদ্যালয়-দুপুর,
যেখানে সহপাঠীদের হাস্যরোল, কিশোর চঞ্চলতা, কোলাহল মিলে নির্মিত হত এক অনির্বচনীয় সঙ্গীত।
সেই অনিঃশেষ প্রফুল্লতা আজ শুধুই স্মৃতির মলিন রেখাচিত্র।
তবুও এই নিস্তব্ধতার গভীরেও খুঁজে পাই এক অভ্যন্তরীণ প্রশান্তির গূঢ় পাঠ।
যেন স্তব্ধতাই হয়ে উঠেছে অন্তর্জগতে প্রবেশের গোপন দ্যোতক।
এই অবচেতন রাত্রি বলিয়ে দেয়,
স্থবিরতা মানেই অনন্ত শূন্যতা নয়,
বরং সেটিই হতে পারে এক আত্মবিশ্লেষণের অনবদ্য অবকাশ।
হয়তো, অনাগত প্রভাতে পুনরায় রঙিন হয়ে উঠবে জীবনরেখা,
উচ্ছ্বাসে ফিরবে হারানো দিনগুলো।
তবে আজকের এই নীরব রাতটি শিক্ষা দেয়—বিচরণহীনতার অন্তরালেও থাকে আবিষ্কারের এক অপার সম্ভাবনা,
থাকে হারিয়ে যাওয়া অনুভবের পুনর্জন্ম।
=========