তুমি যদি হতে রূপান্তরের এক অনির্বচনীয় রূপক,
আমি তবে হতাম ব্যঞ্জনাময় প্রতিস্মৃতি—
যেখানে নিসর্গের প্রতিটি অনুষঙ্গ, প্রতিটি সংবেদ,
সম্বিতের অতলান্তিতে গেয়ে যেতো চিরন্তন সংলাপ।
তুমি যদি হতে গগনের দিগন্ত-জোড়া নীল স্বপ্ন,
আমি হতাম অপূর্ণ ব্যাকুলতায় ছায়াচ্ছন্ন প্রতিধ্বনি,
তোমার উচ্ছ্বসিত তরঙ্গে অবগাহন করে—
প্রতীক্ষার আকাশে ছড়িয়ে দিতাম নৈঃশব্দ্যের অনুনাদ।
তুমি যদি হতে ক্ষণিক আবেশের সন্ধ্যাপ্রেম,
আমি তবে হতাম সময়ের অতল জাগরণ,
যেখানে তুমি প্রতিটি বৃষ্টিফোঁটায় রেখে যেতে চিহ্ন,
আর আমি তৃষিত মাটির মতো শোষণ করতাম তোমার অনুপম ধারা।
তুমি যদি হতে অস্তিত্বের অনাগত প্রতিশ্রুতি,
আমি হতাম প্রতীক্ষার ধূলিধূসর প্রান্তর—
যেখানে প্রতিটি মিলনে, প্রতিটি বিচ্ছেদে
জেগে থাকতো অসীম প্রেমের অপার নির্বাকতা।
তুমি যদি হতে অন্তর্লীন প্রান্তরের অনির্বচনীয় প্রতীক,
আমি হতাম সেই আধ্যাত্মিক প্রতিস্মৃতি,
যেখানে প্রতিটি অনুভব জেগে থাকে—
এক অন্তর্বেদনার অনিবার্য সংগীত হয়ে।
তুমি যদি হতে অস্তিত্বের অন্তরালে সুপ্ত সম্ভাবনার ছায়াপথ,
আমি হতাম সেই চেতনার সঞ্চারস্থল,
যেখানে প্রতিটি শব্দহীন ধ্বনি পরিণত হয় অনুপম সুরে,
এক চিরকালিক উপলব্ধির অন্তর্গত আকাঙ্ক্ষায়।
তোমার স্বরূপ যদি হতো অচেনা গগনের বিস্তার,
আমিও তবে হতে চাই ছায়াচ্ছন্ন প্রতিসরণ—
এক নিরব আকুলতা,
যে তোমার তরঙ্গে আত্মমগ্ন হয়ে প্রতিটি নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করে ব্যাকুলতার অলিখিত কাব্য।
তুমি যদি হতে সন্ধ্যাবেলায় অবগাহিত মুহূর্ত,
আমি হতাম সময়ের অবিস্মরণীয় জাগরণ,
যে প্রতিটি বিন্দুতে ধারণ করে তোমার ঋতুবিনিময়ের চিহ্ন।
প্রতিটি দৃষ্টি, প্রতিটি স্পর্শ, যদি হতো তোমার অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি,
তবে আমি হতে চাই সেই নির্জন প্রান্তর—
যেখানে মিলন ও বিচ্ছেদ উভয়েই রচিত হয় এক নিঃশব্দ প্রেমপত্রের অনন্ত আখরে।
আমি হবো সেই ধূসর অপেক্ষা, যে অপেক্ষা করে না, তবুও চিরকাল জেগে থাকে—
শুধু তোমার জন্য, শুধুই তোমাতে মিশে যাবার অনন্ত আঘোষে।
========