সম্পর্ক এক অবিনশ্বর শেকল,
যার বাঁধনে গড়ে ওঠে মানব জীবন।
স্নেহের আবরণে তা হয় কোমল,
আবার প্রেম, ভালোবাসা, দুঃখ-কষ্টের কঠিন ভারে তা অদৃশ্য কারাগার।
এই বন্ধন মুক্তি দেয় না, বরং শৃঙ্খলে বাঁধে,
কখনো আশ্রয়, কখনো যন্ত্রণা,
কখনো আনন্দ, কখনো বিষাদে ভরা।

পিতা-মাতা এক ছায়া,
যাদের ভালোবাসা শেকড়ের মতো শক্ত—
কিন্তু একদিন সেই শেকড়েই শ্বাসরোধ হয় স্বাধীনতার।
ভাই-বোন সহযোদ্ধা,
যাদের সাথে ভাগ করা হয় শৈশবের আনন্দ,
কিন্তু বড় হতে হতে সেই সম্পর্কেই জমে ওঠে ঈর্ষার কুয়াশা।
স্বামী-স্ত্রী, দুই অর্ধেকের বন্ধন,
কিন্তু কখনো সে বন্ধনই রূপ নেয় শিকলে,
প্রত্যাশার ভারে ক্লান্ত হয় আত্মা,
ভালোবাসার দৃষ্টিতে লুকিয়ে থাকে দুঃখের ছায়া।

পুত্র-কন্যা হৃদয়ের একাংশ,
যাদের জন্য আত্মত্যাগ স্বাভাবিক!
কিন্তু সময়ের স্রোতে একদিন তারাই হয়ে ওঠে দূর,
মমতার বন্ধন ফিকে হয়, সম্পর্ক হয় শুষ্ক,
শুধু থেকে যায় দায়িত্বের অবশিষ্ট ছাপ।
পাড়া-প্রতিবেশী—কখনো সহমর্মী, কখনো নীরব প্রতিদ্বন্দ্বী,
যাদের হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকে হিসেবের খাতা।

মানুষ সম্পর্কের সুতোয় বাঁধা,
চাইলেও ছিন্ন করা যায় না,
কারণ একাকিত্বের ভয় সম্পর্কের শৃঙ্খলকেও স্নেহময় করে তোলে।
সম্পর্ক এক দ্বন্দ্ব, এ এক মায়াজাল—
যা কখনো আশ্রয়, কখনো এক অদৃশ্য শাস্তি।
সম্পর্কের মায়াজালে'ই মানব জীবন সমাপ্তি।

========