জীবন, এক অনন্ত স্মৃতির মহাসাগর,
যার প্রত্যেকটি তরঙ্গ অন্তর্গত সত্তাকে ছুঁয়ে যায় নিঃশব্দ অথচ গভীর অভিঘাতে।
আমরা হয়তো সচেতনভাবেই এ সাগরের ঢেউ থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখার প্রয়াস করি,
স্মৃতির ভারকে উপেক্ষা করার আত্মপ্রবঞ্চনায় মগ্ন থাকি,
কিন্তু বাস্তবতায় তারা আমাদের অস্তিত্বে নিরবচ্ছিন্নভাবে লেপ্টে থাকে—অদৃশ্য, অথচ সর্বব্যাপী।
স্মৃতি, কখনো কখনো করুণার সুরে আবৃত এক বিষণ্ণতা,
আবার কখনো সুখস্মৃতির উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত এক রোদেলা বিকেল।
একটিমাত্র শব্দ, একটি দৃশ্য কিংবা একটি সুগন্ধ—সবকিছুই সেই বিস্মৃত বলে মনে করা মুহূর্তগুলোকে আবারও নবজীবিত করে তোলে।
তারা আসে অবারিত চিন্তার জোয়ারে,
আর আমাদের চেতনার অন্তঃস্রোতে সৃষ্টি করে নতুন নতুন প্রবাহ।
অনেকে বলেন, জীবন হলো কেবল বর্তমানের উপাখ্যান।
কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে, প্রতিটি বর্তমান মুহূর্তই অতীতের প্রতিস্ব, যার গর্ভে লুকিয়ে থাকে হাজারো স্মৃতিচিহ্ন।
এরা কখনো হয় নিয়তির নকশাকার, কখনো হয় অন্তর্দৃষ্টি প্রদীপ,
যাদের আলোয় আমরা আমাদের গন্তব্য নির্ধারণ করি—অজান্তেই।
জীবন তাই কেবল নিরবিচ্ছিন্ন অগ্রযাত্রা নয়, বরং এক অন্তহীন স্মৃতিনির্ভর পরিভ্রমণ।
আমরা স্মৃতির এই অনিবার্য আকর্ষণ থেকে মুক্ত হতে পারি না,
কারণ স্মৃতিই তো আমাদের পরিচয়ের মৌল উপাদান। জীবন মানে সেই অনিবার্য সম্মোহনের সঙ্গে সহাবস্থান,
জীবন মানে স্মৃতির অদৃশ্য সূত্রে বাঁধা এক অনবদ্য অভিযাত্রা—যেখানে প্রতিটি ধাপে অতীতের ছায়া নতুনভাবে রূপ পায়,
এবং আমাদের ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণ করে।
=========