কৃতজ্ঞতা এক দুর্বোধ্য আবর্ত,
আত্মার অন্তর্লীন গহ্বরে জন্ম নেওয়া এক অন্তহীন প্রতিধ্বনি।
এ কোনো সরল অনুভূতির নাম নয়;
বরং এ এক অদৃশ্য শৃঙ্খল, যা হৃদয়কে কষে বেঁধে রাখে অপরের ঔদার্যের অগ্নিসংযোগে।
এ এক নীরব অথচ দহনময় বিস্ফোরণ—
যেখানে অহংকারের অনড় দুর্গ চূর্ণ হয়ে গুঁড়িয়ে যায় বিনম্রতার ধারালো শিলাচূর্ণে।
কৃতজ্ঞতা কোনো নিরীহ প্রশংসাবাক্য নয়,
এটি আত্মার এক সুতীক্ষ্ণ ক্ষতচিহ্ন—
যা প্রতিনিয়ত স্মরণ করায় অসম্পূর্ণতা, অপার ঋণ।
এর স্রোত কালচক্রের মতো —
অতীতের ঋণস্বীকারে উদ্ভাসিত, বর্তমানের নম্রতায় প্রশান্ত, এবং ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির শিকলে আবদ্ধ।
কৃতজ্ঞতা কখনও মুক্তি দেয় না;
এটি দুঃসহ অনুরণনের মতো চিরকাল প্রতিধ্বনিত হয় মনপ্রাণের অলিন্দে।
এ এক অগ্নিময় শপথ,
যা আত্মমর্যাদার শীতল দেয়ালে ফাটল ধরায়।
আত্মসন্তুষ্টির দুর্ভেদ্য আচ্ছাদন ছিন্ন করে কৃতজ্ঞতা জাগিয়ে তোলে অনুচ্চারিত আর্তনাদ!
যে আর্তনাদ অহংবোধকে নিঃশেষিত করে,
অথচ হৃদয়ের গভীরে এক অকথ্য শান্তি বর্ষণ করে।
কৃতজ্ঞতা আশীর্বাদের মোড়কে আবৃত এক অন্তর্লীন অভিশাপ।
এটি আমাদের মনুষ্যত্বের মূলে শেকড় গাড়ে,
আবার সেই শেকড়েই জড়িয়ে ফেলে অবসানহীন ঋণের শিকল।
মুক্তির আকাঙ্ক্ষা এখানে অর্থহীন;
কারণ কৃতজ্ঞতা এক অমোঘ সত্য — নির্বাক, অথচ সর্বগ্রাসী।
কৃতজ্ঞতা এক অদৃশ্য সঙ্কল্প, এক অনিবার্য নীরবতার দেয়াল।
========