মানবমনের অতল গহ্বরে প্রবাহিত এক অব্যক্ত অগ্নিস্রোত,
যেখানে আবেগের বিস্ফোরণ আর যুক্তির নির্বিকারতা এক অদৃশ্য যুদ্ধে লিপ্ত।
প্রতিটি চিন্তার তরঙ্গ, প্রতিটি অনুভূতির স্পন্দন—সেখানে শব্দহীন বজ্রপাতের মতো আঘাত করে অন্তরের শিলাবদ্ধ দেয়ালে।

ভালোবাসা এখানে এক দুর্বোধ্য সমীকরণ,
কখনো তা স্নিগ্ধ শিশির, কখনো প্রলয়ংকর ঝড়।
আকাঙ্ক্ষার লেলিহান শিখা বারবার হৃদয়ের অলিন্দে জ্বলে উঠে,
অথচ বাস্তবতার বরফমাখা বাতাস সেই আগুনকে নিভিয়ে দিতে চায়।
হৃদয় এক অবরুদ্ধ আগ্নেয়গিরি, যার বিস্ফোরণ নীরব, কিন্তু প্রতিধ্বনি হয় বিধ্বংসী।

বিরহ সেখানে বিষাক্ত অমৃত —
যে প্রতিটি মুহূর্তে পুড়িয়ে দেয় আত্মার গভীরতম স্তর,
অথচ রেখে যায় এক অবিনশ্বর ক্ষত।
প্রত্যাশা আর হতাশার পারস্পরিক সংঘর্ষে আত্মার গায়ে আঁকা হয় এক অদৃশ্য দাগ,
যা অবিরাম বয়ে বেড়ায় সময়ের স্রোতে।

সময় নিজেও এখানে এক নিষ্ঠুর কারিগর!
অতীতের স্মৃতিগুলোকে তীক্ষ্ণ কুঠারে শাণিত করে,
আর ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে আবদ্ধ করে অনিশ্চয়তার কারাগারে।
প্রতিটি নিঃশ্বাস হয়ে ওঠে এক নিঃস্তব্ধ আর্তনাদ,
প্রতিটি দৃষ্টি হয়ে ওঠে নির্লিপ্ত প্রতিবিম্ব।

জীবনের এই যাত্রা এক অনন্ত প্যারাডক্স —
সুখ আর দুঃখ, আশা আর নিরাশা, সৃষ্টি আর বিনাশ একই সুতোর মধ্যে গ্রথিত।
আবেগের প্রবল স্রোত আর যুক্তির অনমনীয় দেয়াল মিলেমিশে তৈরি করে এক অন্তর্লীন বিস্ফোরণ,
যার ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে থাকে এক নিঃসঙ্গ আত্মা!  
পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও, তার ভস্মে জ্বলতে থাকে এক অনির্বাণ শিখা।
এই জীবন এক অভ্যন্তরীণ অগ্নিস্রোত —
যার আগুনে দগ্ধ হয় হৃদয়, অথচ সেই আগুনেই জেগে ওঠে আত্মার অবিনশ্বর জাগরণ।

========