সভ্যতার অপবিত্র চূড়ান্ত বিন্দুতে দাঁড়িয়ে, আজ প্রত্যক্ষ করছি এক নৈতিক বিপর্যয়ের দহনরূপী মহারণ্য।
চেতনার ভূগোল আজ কলুষতার প্রলেপে ঢেকে গেছে,
যেখানে লোভ, প্রবঞ্চনা, ও আত্মকেন্দ্রিকতার সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে জাতির হৃদয়কোষে প্রতিদিন রোপিত হচ্ছে বিষবৃক্ষ!
আর এর শিকড়ে গ্রথিত আছে দুরভিসন্ধিমূলক এক দিগ্বিনাশী নীলনকশা।
রাষ্ট্রযন্ত্র পরিণত হয়েছে ক্ষমতাসর্বস্ব নেপথ্য কারিগরের এক অবিনাশী ক্রীড়নকে।
যেখানে ন্যায়ের আসনে আসীন দুর্নীতির প্রেতছায়া!
আর নীতির মানদণ্ড আজ কৃত্রিম অভিজাত্যের পদতলে চূর্ণ।
আত্মপরিচয়ের মূলসূত্র শিক্ষা;
তাকেও আজ অপহৃত করেছে কাগুজে কৃতিত্বের ভ্রান্ত প্রতিভূরা,
যাদের ছায়ায় নির্মমভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে সত্তার সম্ভাব্য বিকাশ।
পাণ্ডিত্য আজ বিষণ্ন, আদর্শ আজ উপহাসিত,
শিক্ষকের স্থান দখল করেছে নীতিহীন সুবিধাবাদী চরিত্র।
জ্ঞানের প্রদীপ আজ নিঃশেষিত, অন্ধকারের সাথে এক মৌন দ্বন্দ্বে লিপ্ত।
বিবেকের মসীহারা মুখরিত হতে পারছে না মেকি প্রগতির কোলাহলে।
প্রশাসনের শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত হচ্ছে কালো লেনদেনের প্রবাহ;
চাকরির প্রতিশ্রুতির নামে বিক্রি হচ্ছে স্বপ্ন,
তরুণ আত্মা মত্ত হচ্ছে অজ্ঞানের নেশায়,
প্রজ্ঞার স্তম্ভগুলো নতজানু হচ্ছে ক্ষমতাপূজার মঞ্চে।
নীতিনির্মাতা ও স্বৈরাচার একীভূত এক দ্বিমুখী অভিশাপের প্রতিচ্ছবি,
যারা নিয়ম তৈরির নামে নিয়ম ভাঙার বৈধতা রচনা করে।
তাদের মুখোশপরা শাসনে, জনতার কান্না মিলিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের কৃত্রিম করতালিতে,
যেখানে মঞ্চায়িত হচ্ছে প্রলোভনের পরাকাষ্ঠা।
এই ভয়াবহ বিভ্রান্তির কালে,
সত্তার মৌন বিলাপ প্রতিনিয়ত ক্ষয়ে যাচ্ছে সময়ের অন্ধকার গর্ভে!
যেখানে প্রত্যুষ নেই, নেই নবজাগরণের সম্ভাবনা।
শুধু লেখা হচ্ছে এক দীর্ঘ, ঘন, ও কলঙ্কিত প্রস্তাবনা!
লেখা হচ্ছে একটি কলিকালস্নাত সভ্যতার অবসানপত্র।
==========