কবিতা জীবনের প্রতিচ্ছবি!
মনের মাঝে কিন্নরকণ্ঠ নারীর বেলোয়ারি
চুড়ি ভাঙার মোহনীয় আওয়াজ,
অষ্টাদশীর পাগল করা নিক্কণ,
ধবধবে সাদা পালকের বলাকা,
কিংবা গাঙশালিকের উদ্দাম ওড়াউড়ি,
একপশলা রিমঝিম বৃষ্টির পর পুবাকাশের রামধনু,
দূর্বাঘাসের গায়ে ঝুলে থাকা মুক্তোদানার
মতো শান্ত শবনম,
পাহাড়ের অশ্রু, নদীর কুল কুল ধ্বনি,
স্নিগ্ধ বিকেল, উদাস দুপুর, বিরহ-বেদনা,
হর্ষ-বিষাদ-
আর নিঃশব্দ সব শব্দময়তা নিয়ে লেখনী
আর কাগজের সমন্বয়ে যা কিছু লিখা হয়ে
থাকে তা-ই তো কবিতা,
আর যারা তা লিখেন তারাই পরিপূর্ণ
নিটোল কবি।


সদ্য-গর্ভ-নির্গত মুরগির ডিমের মতোই কোমল আর কবোষ্ণ থাকে নবীন কবিদের কবিতা।
যাকে টেপাটেপি করা যায় অনায়াসে,
তবে তা ক্ষণিকের তরে মাত্র।
সে সুযোগ থাকে না আর কয়েক মূহুর্ত
পরে।


কিছুদিন আগে স্বনামখ্যাত এক কবি
লিখলেন যে "দুর্বল কবিতা কবির মৃত্যু
ঘটায়।"
তিনি লিখেন ভালো- তা অনস্বীকার্য,
তথাপিও তার এই উক্তিটির সাথে সম্পূর্ণ
দ্বিমত আমি।
বুকের খচখচানিটা যেতে চায় না একদমি,
আবারও ঢুকি তার ওয়ালে,
অবাক! তার স্ট্যাটাসটি হাওয়া!


তবে কি রবিঠাকুর, নজরুল ইসলাম,
জীবনানন্দ দাস, শামসুর রাহমান, বুদ্ধদেব বসু, হেলাল হাফিজ, আল মাহমুদ, পূর্নেন্দু পত্রী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নির্মলেন্দু গুন-এর মতো বিখ্যাত প্রবীন কবিদের প্রয়াণ পরবর্তী আর কেহই কিছু লিখবেন না!


কিছুটা বিস্মিত হই আমি,
হই কিছুটা লজ্জিতও,
তার অহংবোধে কিঞ্চিত হলেও শ্রদ্ধাবোধ
কমিয়ে আনে তার প্রতি!


একজন অশিক্ষিত কিংবা স্বশিক্ষিত লোক
একথা বললে মানাতো ভালো, কিন্তু...!
তবে কী নবীন কবিদের প্রকারান্তরে
নিরুৎসাহিতই করা হলো না কবিতা লিখতে!
গুটিয়ে নেওয়া পা যেমন করে বুকে চেপে
রেখে জল ছেড়ে হাজারো মাইল পাড়ি
দেয় সাইবেরিয়ান বালিহাঁস,
তেমনই করে হাত-পা গুটিয়ে দেশ ছেড়ে
উড়ে যেতে হবে শিক্ষানবিশ কবিদেরও?
স্যালুকাস!
তবে কি সবকিছু ছেড়ে ছুঁড়ে দিয়ে এইচ এম সাইদ, মোহাম্মদ খায়রুল কাদির, শহিদ উদ্দিন আহমেদ, মিশা খাতুন, অপরাজীতা মৌ, সাইফুল ইসলাম সহ সকল নবীন কবি-লেখক রা আঙুল চুষবেন বসে বসে?


বড়ো কষ্ট হয় আমার, কষ্ট হয় আমাদের,
এমন জ্ঞানপাপী অর্বাচীনদের বাক্য বাণে!
মাঝে মাঝে এসব জ্ঞানপাপীদের ভয়ে কষ্টেরাও চকিতে পালিয়ে যায় শরীর-বাড়ি ছেড়ে!
কষ্টেরা হয় ক্যানসারাস, আর কঠিন
শিলাদের চোখেও নেমে আসে বিন্দু বিন্দু
জল!
নিঃশব্দের শব্দময়তা ভীষণভাবে আহত
করে কাউকে কাউকে!!


=========