শিষ্টাচার এক মহত্তম আদর্শ, যার প্রান্তদেশ স্পর্শ করে নৈতিকতার সুগভীর স্রোতধারা।
এ নিছক বাহ্যিক কোন সৌজন্য নয়, বরং অন্তর্নিহিত চরিত্রের দীপ্ত প্রতিচ্ছবি।
যে হৃদয় শিষ্টাচারের সুরভি ধারণ করে, সে কখনও পথভ্রষ্টতার অন্ধকূপে পতিত হয় না;
বরং সত্যের অমল ধারায় নিজেকে শুদ্ধ করে তোলে।
নৈতিকতার আদলে গঠিত এই শিক্ষা অটল প্রাচীরসম,
যা বিপথগামী চিন্তার প্রতিটি আক্রমণ রুখে দাঁড়ায়।
গুরুজন — যাঁরা অভিজ্ঞতার গহ্বর থেকে তুলে আনেন প্রজ্ঞার মুক্তো,
তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা হলো আত্মার পরিশুদ্ধ প্রতিধ্বনি।
এই শ্রদ্ধা কেবল আনুষ্ঠানিক কুর্নিশ নয়,
এটি হলো এক অনির্বচনীয় আত্মস্ফূর্তি,
যা ভক্তির সুধারসে সিঞ্চিত হয়ে মনুষ্যত্বকে মহিমান্বিত করে তোলে।
গুরুজনের আশীর্বাদ যেন নীরব শপথ —
যেখানে বিনয়ী মনবৃত্তি ন্যায়ের সোপানে আরোহণ করে।
শিক্ষকতা শুধুমাত্র পাণ্ডিত্যের প্রচার নয়,
এটি হলো মানবগঠনের অনবদ্য কর্মযজ্ঞ।
শিক্ষক তাঁর জ্ঞানের আলো দিয়ে অজ্ঞতার ঘনঘটা চূর্ণ করেন এবং শিষ্যের অন্তরলোকে প্রজ্বলিত করেন শুদ্ধতার মশাল।
তাঁদের শিক্ষা মুক্তির সমতলে নিয়ে যায় —
যে মুক্তি বাহ্যিক সাফল্যের নয়, বরং আত্মার মুক্তি, সত্যের মুক্তি, চরিত্রের পরিশুদ্ধ মুক্তি।
এই শিষ্টাচার, এই নৈতিক শিক্ষা — এগুলোই আত্মার অলংকার, চরিত্রের দুর্গ।
কারণ শিষ্টাচারহীন জ্ঞান হলো ধারালো অস্ত্র,
যা সমাজের অস্থিরতা বাড়ায়;
অথচ নৈতিকতার অলঙ্কৃত শিক্ষা হলো প্রশান্তির বীজ, যা মানবতার বৃক্ষকে সবুজে স্নিগ্ধ রাখে।
শিষ্টাচারের দীপ্ত আলোকেই জ্ঞানের শিখা প্রজ্জ্বলিত হয়।
সেই আলোয় পথচলা মানুষগুলোই হয় বিনয়ী,
হয় পরিশুদ্ধ ও সত্যের প্রতি অবিচল।
শিক্ষকতার স্বার্থকতা খুঁজে পাক মুক্তির আঙিনায়,
যেখানে গুরুজনদের শ্রদ্ধা আর ভক্তি মিলে এক মহৎ সমাজের ভিত্তি গড়ে তুলবে।
========