আলোরও আগে জন্ম নিয়েছিল অভাব—
একটি নির্বাক স্পন্দন,
যার ছায়ায় প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার অভিনয় করি।
ইচ্ছেরা আজ আর দিকচিহ্ন নয়,
তারা দুলে ওঠে অন্তঃস্থ এক শূন্যস্বরের মৃদু কাঁপনে,
যার বর্ণমালা খুঁজে ফেরে ভাষাহীন গহ্বরে।
স্বপ্নেরা এখন চেতনাহীন পলিনিষিক্ত কণিকা,
তারা মাথা রাখে প্রাগৈতিহাসিক ব্যর্থতার কোলে!
আর বাস্তবতা গায়ে জড়ায় মায়াবর্জিত এক ধাতব চাদর,
যেখানে স্পর্শ মানে ক্ষরণ,
আর কামনা মানে খণ্ডকালীন ধ্বংস।
জীবনের ক্যালেন্ডারে দিনগুলো শুধু সংখ্যা নয়,
তারা ঘূর্ণিবাত্যায় ঘূর্ণিত হাবুডুবু একক সত্তা,
যার ওপর অভ্যাস গাঁথে জীবিত থাকার আবরণ।
আর অভ্যাস?
সে তো প্রার্থনার এক নতমুখী প্রতিমা,
যাকে ভাঙলেও শব্দ হয় না।
এখানে আহারও প্রতীক—
তিন বেলার খাদ্য মানে এক মৃত জ্যোতিষচক্র!
যেখানে শরীর বেঁচে থাকে, কিন্তু অস্তিত্ব নিঃশেষিত হয়।
ইচ্ছেগুলো দাঁড়িয়ে থাকে—
চোখ নেই, হাত নেই, তবু প্রশ্ন ফেলে যায়—
"আমি কি এক রকম শূন্যতা, নাকি শূন্যতার ছায়া?"
এবং ঠিক তখনই,
একটি নীরব উচ্চারণ গড়িয়ে পড়ে আত্মার খাঁজে,
সে হয়তো নাম ধরে ডাকে না,
তবু জানিয়ে দেয়, কেউ আছে ওপারে।
হে অনন্ত করুণা!
দাও সেই অন্তর্দর্শিত শক্তি,
যার অভিঘাতে অস্তিত্বের প্রতিটি তমসাচ্ছন্ন কোষ আলোকিত হয়ে উঠে!
যাতে অন্তে, সময়ের ওপারে,
পূর্ণতা পায় এই অসমাপ্ত জীবন-সঙ্গীত।
হে অদৃশ্য স্পন্দন,
আমার শিরার গ্রন্থিতে আলো ঢেলে দাও,
যাতে অন্তিম সীমানায় পৌঁছে,
আমিও একদিন নিঃশব্দ আলোর নাম ধরে ডেকে উঠতে পারি।
========