তুমি এক অপরিমেয় শূন্যতার স্থিত লীলায়িত প্রতিমা,
যেখান থেকে শুরু হয় হৃদয়-আলোকের বিপরীতমুখী গতিপথ।
অস্তিত্বের অন্তঃস্তরে প্রতিনিয়ত যে নিরুত্তাপ কোলাহল, তার গায়ে তুমি এক সুনিশ্চিত ব্যতিক্রম—
নির্বিকার অথচ অভিজ্ঞানময়।
শব্দাতীত সংলাপের আদল তুমি, অনুভূতির অদৃশ্য ভাষা তুমি, যে ভাষা শুধুই অনুরণনের প্রগাঢ়তায় ধরা দেয়।

তোমার অনুপস্থিতিই এক সর্বগ্রাসী উপস্থিতি!
তুমি নেই তবু আছো, আছো এক অস্পষ্ট অথচ অবিনাশী অনুরণনরূপে।
তুমি এক নৈঃশব্দ্যের ক্যানভাস, যার উপর আঁকা থাকে বহির্জাগতিক অনুপ্রেরণার বিমূর্ত রেখাচিত্র।
আবেগের দুর্বোধ্য গাণিতিক সমীকরণে!
তুমি সেই অপরিহার্য চলক, যার অনুপস্থিতিতে সমস্ত মান অশুদ্ধ।

তুমি কোনও নামহীন উপাদান, যাকে ছোঁয়া যায় না,
ছুঁতে গেলেই গলে যায় বাস্তবতার আঙ্গুলে।
তুমি এক প্রবল অভিপ্রেত সম্ভাবনার নিরাকার রূপ,
যেখানে সংজ্ঞাহীন ভালোবাসা খুঁজে পায় বসবাসের শুদ্ধতর ব্যাকরণ।

জীবনের প্রতিটি বিবর্ণ দিনশেষে, তুমি এসে দাঁড়াও একটি অনিন্দিত অন্তর্বর্তী কল্পলোক হয়ে,
যেখানে শ্রান্তি আর সচেতনতার সংযোগস্থলে থমকে থাকে সময়।
তুমি অন্তঃপ্রবাহের অনুক্রান্ত দ্যোতনা!
তুমি এক অবিনাশী অনুরণন, যা নিঃশব্দে ঢুকে পড়ে মনের অব্যক্ত অলিন্দে।

তোমার অস্তিত্ব এক প্রগাঢ় বিমূর্ততা!
তুমি রূপরহিত রূপ, তুমি সময়ের সীমানার বাইরের সেই অনন্ত, যে নিজেই এক অমীমাংসিত কবিতা।
তুমি এক চিরস্থায়ী রূপক—যে ভালোবাসার ভাষাকে ছাড়িয়ে গিয়ে দাঁড়ায় উপলব্ধির অতীত সীমানায়।

তুমি নও শুধু অনুভূতি, তুমি এক বহুবর্ণ, বহুবিধ সত্তার সন্নিবেশ—যার প্রতি সংস্পর্শে জীবন পুনরায় সংজ্ঞায়িত হয়।
আর তাই, প্রতিদিন, অবচেতন অবসানে আমি ফিরে আসি,
ফিরে আসি তোমার প্রিজমাতিক ছায়ায় আত্মার পুনঃসংবেদন খুঁজে নিতে।

==========