তোমাকে ভালোবাসার পর, আমার অস্তিত্ব যেন—
এক নিঃশেষ উপলব্ধির অন্তঃগহ্বরে পতিত!
যেখানে হৃদয়ের প্রতিটি দোলন হয়ে ওঠে শূন্যতার অনুরণিত কর্কশতা।
অতীতের সরলতা এখন এক ক্লান্তিকর জটিলতায় রূপান্তরিত;
এক অদৃশ্য অথচ অনিবার্য দহনে প্রতিটি নিঃশ্বাসে জ্বলে ওঠে অস্তিত্বের ক্ষয়চিহ্ন।
তুমি আমার চেতনার অলিন্দে প্রবেশ করেছো এক অপ্রতিরোধ্য সমুদ্ররূপে!
তোমার প্রবাহে গ্রাস করেছে আমার নিজস্বতা,  
আত্মপরিচয় বিলীন হয়ে গিয়েছে তোমার প্রভাবিত ছায়াতলে।

তোমার অনুপস্থিতি এক শৈত্যময় নৈঃশব্দ্যের প্রান্তর,
যেখানে আলো কুয়াশার মতো নিস্প্রভ,
আর শব্দ এক ব্যর্থ অনুনয়।
সেই শূন্যতাতেই আজকের আমার আবাস,
যেখানে না থেকেও তুমি আছো, সর্বব্যাপী ছায়ারূপে।  
ভালোবাসা এখানে আর উদ্ভাসিত অনুভূতি নয়,
এটি এক অনিঃশেষ আত্মবিসর্জনের নাম—
যেখানে প্রতিটি ক্ষরণে জন্ম নেয় এক অন্তর্জাগতিক টিকে থাকার আকুতি।

আমার মনোজগৎ এখন এক মনোলিথিক স্তম্ভ,
যেখানে সমস্ত বোধাবেগ জটিল বিমূর্ততায় রূপান্তরিত!
তুমি সেখানে নেই, অথচ প্রতিটি ধ্বনিতে, প্রতিটি অভিপ্রায়ে তুমি অনিবার্যভাবে জেগে আছো।
তোমার মুখ, যা একদিকে শান্তির প্রতীক, অন্যদিকে অস্থিরতার মহাকাব্য,
আমার অবচেতনে জাগিয়ে তোলে সেই অভ্যন্তরীণ চিৎকার,
যা ভাষাহীন, অথচ শ্রুতিময়।

ভালো না থাকা-ই আজ আমার প্রগাঢ় সত্য,
এই অভাব, এই বেদনাবিধুর রূপান্তরেই নিহিত—
প্রেমের নিঃশেষ অথচ মহিমান্বিত প্রতিচ্ছবি।
আমি ভেঙে পড়িনি, আমি শুধু আর ‘আমি’ নেই—
আমি এক উপলব্ধিসঞ্জাত প্রতিচ্ছায়া,
যেখানে তুমি অনুপস্থিত হয়েও সর্বদা বর্তমান।

==========