স্কুলের বেলা ছিল সোনার ধুলোপথ,
আমি হাঁটতাম নীরব, পকেটে স্বপ্ন, চোখে একটি আকাশ।
তুমি গেলে পাশ দিয়ে—
আর সময় থেমে রইল, যেন দিগন্ত ঘুমিয়ে পড়লো তোমার কোলে।

তুমি ছিলে সেই অচেনা রোদের মতো,
যার স্পর্শে গলে যায় বুকের জমে থাকা তুষার।
তোমার হাসিতে ঝরে পড়তো মুক্তোর মতো নীরব বজ্রপাত—
আমি কাঁপতাম, আর কেউ জানতো না, দেখতো না।

তুমি ছিলে চতুর্দিকে ছড়ানো এক অপার্থিব দীপ্তি,
এক দৃষ্টিতে তুমি লিখতে জীবনের সংজ্ঞা,
আর আমি শুধু ছায়া,
একজন নির্বাক উপাসক,
যে প্রতিদিন তোমার পায়ের শব্দে জপতো নিজের নাম ভুলে।

আমার কলমে ছিল না ভাষা,
তোমার চোখে ছিল কবিতার জন্মদাগ—
আমার প্রতিটি লজ্জা, প্রতিটি না বলা বাক্য,
তোমার হাসির নিচে নিঃশব্দে অর্পণ করতাম।

তুমি জানোনি—
আমার খাতার প্রতিটি পাতায় ছিল তোমার শ্বাস,
আমি পড়তাম গণিত, অথচ মনে চলতো
তোমার নখে আলোর প্রতিফলন কেমন হয়, সেই গাণিতিক বিভ্রান্তি।

আজ তুমি নেই,
তবু আমি রয়েছি সেই পুরনো বেঞ্চে,
যেখানে কাঠে খোদাই করে রেখেছিলাম—
"তুমি, আমি, এবং এই অসমাপ্ত কবিতা"।

এখনও সন্ধ্যায় পুরনো স্কুল ঘরের জানালায় বসে
আমি শুনি বাতাসে তোমার হাঁটার সুর, নুপুর ধন্নি।
আর জানালা দিয়ে আসে শুকনো পাতায় মোড়া
একটি প্রাচীন প্রার্থনা, যার ভাষা ছিল— তুমি, শুধু তুমি।