রাতজাগা অগ্নিনেত্রীরা বোনে আলোকসূত্র,
নিঃশব্দের প্রাচীর ভাঙে অগ্নিপুচ্ছ ধূমকেতুর শুক্র!
তিমিরদগ্ধ পথে আমি, ছায়াপথে রক্তিম স্রোতে ভাসি-
অরণ্যের উৎসব সেখানে, মৃত্যুর মহোৎসবে হাসি!
কোটি যুগ ধ’রে একা, নক্ষত্রভোজে মাতোয়ারা,
তবুও খুঁজি তোমায়, হে নিশীথিনী-অধরা!
কে তুমি গহননিশায়—জ্যোতির্ময়ী, নিভৃতচারিণী?
তোমার চোখে ঝরে পড়ে কালপুরুষের কর্মব্রত-রিণী।
তোমার কপোলতলে লুকায়ে আছে ধূমকেতুর দাহ,
আমার ক্ষত-চিহ্নিত পায়ে রোপিত রাত্রির মাহাত্ম্য!
তোমার অঙ্গুলি যেন ছায়াপথের দগ্ধ সেতু,
স্পর্শে মেলে মহাকালের রুদ্ধ দ্বার—অমোঘ হেতু!
একাকিত্বের ভোজসভায় মাদকতা তোমার নিশ্বাসে,
কোটি আলোকবর্ষ ধ’রে ফসল ফলে তোমার ত্রাসে!
তোমার কৃষ্ণকেশজালে জড়ায়ে ধরা-লুপ্ত চন্দ্র,
আমার হৃদয়-কবর খোঁজে তোমার বক্ষের অনিন্দ্য-সিন্ধু!
তোমার ঠোঁটে মিশে থাকা নক্ষত্রের অমৃত-বিষ,
পান করি - হয়ো আমার মৃত্যু, হয়ো অমর নিশ্বাস!
হে মহাকাল-কন্যা! তব চুম্বনে জাগুক মহাযুগের ধ্বনি,
আমার একাকিত্ব যেন হয় তোমার নিশাচর পাখির ডানা-আগুনি!
তোমার নীরবতা ভাঙে এই রাতজাগা ধূমকেতুর গান,
তোমাতেই মিলাই—হয়ো আমার শেষ রাতের অমোঘ শ্বাসদান!