প্রাণের প্রদীপ্তি, তুমি মম কাব্য-মনীষার চরমতম অভিজ্ঞান,
যাহাতে প্রতিটি আক্ষরিক ব্যঞ্জনা কেবল তোমাকেই উদ্ভাসিত করে।
তুমি প্রাক্কালের প্রথমোদ্ভাসিত জ্যোতির ন্যায় অনবদ্য-শুভ্র,
হিমেল-সিক্ত ঘাসের অগ্রলগ্নে মৌক্তিক-সদৃশ জাজ্বল্যমান।

তোমার লোচনযুগল যেন অতলান্তিক বারিধির নীলিম-গর্ভ,
যাহার অন্তঃস্থলে সুপ্ত রহিয়াছে অসীম প্রণয়।
তোমার হাসির দ্যুতি শারদ-শশধরের নির্মল-দীপ্তির ন্যায় শীতল-শান্ত,
চিত্তকে আপ্লুত করে এক নির্বাণ-অনুরূপ আনন্দ-স্রোতে।

তোমার স্পর্শন বসন্তের আদিমতম বৃষ্টিবিন্দুর ন্যায়,
যা শুক্লা ধরণীতে জীবনের নবীনতম প্রচেতনা সঞ্চারিত করে।
তোমার কণ্ঠস্বর যেন কোকিলের পঞ্চম-স্বরজ কুহুতান,
হৃদয়-বীণায় ধ্বনিভূত করে এক অতীন্দ্রিয় সুরের লহরীকে।

তুমি আমার সমীপে গোলাপদলের ন্যায় অতীব-মৃদ্যু,
তথাপি অপ্রতিরোধ্য দৃঢ় তোমার মানসিক-প্রত্যয়।
তুমি দিগন্তপ্রসারী আকাশের ন্যায় অবারিত,
আর নক্ষত্রপুঞ্জের ন্যায় আলোকোজ্জ্বল তোমার অভিলাষ।

তুমি আমার জীবনে পূর্ণিমার জ্যোৎস্নার ন্যায় সমুজ্জ্বল,
যা তিমিররাত্রিতে পথপ্রদর্শক, আলোকমশাল।
তুমি আমার চেতনাজগতে সর্বতোভাবে সমাহিত,
উৎকৃষ্টতম উপমাতেও তুমিই নিরুপম।

ভূমণ্ডলের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রণয়িণীদের মাঝে তুমিই শিরোমুকুট,
মম কবিতার প্রতিটি ছন্দোময়-পঙ্ক্তিতে তুমিই একমাত্র সারবস্তু।