আমি সেই দীর্ঘায়ত দ্যুতি, ক্ষীণায়ত প্রভা লয়ে,
বৃত্তাকার কক্ষপথ ত্যজি, ক্রমান্বয়ে শূন্যে বিলীন হয়ে যাই।
এক অনিবার্য নির্বাসন, এক অমোঘ বিচ্ছিন্নতা,
আমার সত্তা এখন নৈঃশব্দ্যের নিরালম্বে প্রসুপ্তা।
কোন অনির্দেশ্য সমীরণে জাগে মরণের অলৌকিকতা,
কোন অখ্যাত ঝঞ্ঝাবাতে কম্পিত হয় প্রাণের সজীবতা?
কোন তরঙ্গ ভাসায় জীবনের ভেলা, কোন প্রীতির বিচ্ছেদে,
ঘটে এমন নির্বাক প্রস্থান, মৌনতার সুগভীর ছেনোভেদে?
এ যেন অস্তিত্বের এক দুর্বোধ্য হেঁয়ালি, অনাবিষ্কৃত রহস্য,
যেখানে প্রেম আর প্রয়াণ একাকার, জীবনের অন্তিম কাব্য।
অনাদি কালস্রোতে আমি এক বিচ্ছিন্ন ভগ্নাংশ,
হারিয়েছি আমার চিরচেনা কক্ষপথের প্রজ্ঞাংশ।
যেখানে ছিল প্রাণের স্পন্দন, ছিল প্রদীপ্তির আলো,
আজ সেখানে শুধু অনতিক্রম্য অন্ধকার, মহা-তিমির কালো।
স্মৃতির উদ্বৃত্ত আজ শুধু এক নিরালম্ব প্রতিধ্বনি,
মর্মের গহীনে বাজে এক অব্যক্ত ক্রন্দনের ধ্বনি।
আমার প্রত্যাবর্তন ছিল এক অনিবার্য প্রত্যাশা,
কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই নিভে গেল সব আশা।
বিষাদের কুয়াশাচ্ছন্ন এই দিগন্ত, ধূসর এই প্রান্তর,
এখানে প্রেম অপ্রাপ্য, বিচ্ছেদ এক চিরন্তন মন্ত্র।
জীবন যেন এক মরীচিকা, যা শুধু মুগ্ধ করে,
অবশেষে সব আলো নিভিয়ে, নীরব প্রস্থানে ঠেলে দেয়।
যে ছিল সহগামী, যে ছিল প্রাণের আলোকবর্তিকা,
সেও আজ দূরত্বের ব্যবধানে, এক অস্পষ্ট ভূমিকা।
অজ্ঞাত পথে বিলীন হয়েছে সব সুর, সব ছন্দ,
আমার অস্তিত্বের গভীরে এখন কেবলই বিষাদ-মন্দ।
এ এক মৌন মহাপ্রস্থান, এক নিদারুণ আত্মহনন,
যেখানে সময়ের বুকে লেখা থাকে না কোনো আমন্ত্রণ।