যারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম প্রাতঃসূর্যের উদ্ভাস,
সে আজি রাত্রির ঘনতিমির, আঁধারে করিছে বসবাস।
তাহার কৃষ্ণপক্ষে ইচ্ছের মেঘ, জোনাকির আলোতে স্নান করে,
আর আমি ব্যগ্র ছিলাম সঁপিবারে অনাবিল আলোক তার করে।
আক্ষেপের দহন, এ কেমন নিয়তি, এ কেমন পরিহাস!
মর্মে মর্মে বিদ্ধ আমি, এক অশরীরী দীর্ঘশ্বাস।
বক্ষগহ্বরে গচ্ছিত যত মর্মভেদী স্মৃতির ভার,
যদি শুধু উপাখ্যান হইত, তবে লিখিতাম উপন্যাস তার।
প্রত্যেক অক্ষর ফুটিত বেদনা-পুঞ্জ, রুধির-রঞ্জিত কথা,
অতীতের প্রগাঢ় ক্ষত, জীবনের অলঙ্ঘনীয় ব্যর্থতা।
স্মৃতির উদ্বৃত্ত আজ উপছে পড়া পাত্র, অবারিত অশ্রুধারা,
এ যেন কালের চক্রে পিষ্ট, এক নির্বাক হৃদয়হারা।
তোমার হস্তে ছিল বিষাদের বীজ, তুমি তা করিয়াছ রোপণ,
এখন যদি চাও সুখের শস্য, কেমনে করিব সে বপন?
তুমি যদি রবেছ বিষাদের প্রলেপে, কেমনে আনিব প্রীতি,
এ যে অসম সম্পর্ক, এ যে আত্মার বিপ্রতীপ পরিণতি।
দ্বিমাত্রিক প্রেম তব, আর আমি মাত্রাহীন এক শূন্যতা,
ত্রিমাত্রিক বিশ্বে তুমি এক বহুমাত্রিক বিমূর্ততা।
কে আমি? আমি সেই রুধিরাক্ত মরু-প্রান্তরের,
এক অতৃপ্ত চাতক, অনন্তকাল অপেক্ষারত প্রহরের।
যেখানে সত্যের বারিধারা বর্ষিত হয়নি দীর্ঘ দিনমান,
খণ্ড-বিখণ্ড আত্মা মোর, বিদীর্ণ হৃদয়, নিষ্পেষিত প্রাণ।
গড়া আর ভাঙার খেলায় বহুবার লিপ্ত হইয়াছি অকারণে,
চিনিয়াছি মানবাত্মার কপটতা, মুগ্ধ হইয়াছি তাহাদের অভিনয়ে।
এ জীবন এক যন্ত্রণাময় প্রসূতি, এক অনন্ত দহন,
যেখানে প্রেম শুধু এক ভ্রম, এক মরীচিকার আমন্ত্রন।