আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে রৌদ্দুর আলোয়
ঝলমল করে গাছের পাতায় পাতায়
যখন ফুরিয়ে যায় গোধূলির স্নাত
বিকেলে অস্ফুট  চুম্বনে
তখন বড়ই আপন চেনা
অচেনা ঠেকে চকচকে নিয়ন আলোয় !


আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে পূর্ণিমায়
বিক্ষিপ্ত জোনাকির নিভু নিভু আলোয়
তন্দ্রাচ্ছন্ন প্রেমে আড়ষ্ট
হাতের তালুতে অথবা জলের নিস্তেজ
জলরেখায় দু চারটি মাছের পোনা
তড়িঘড়ি করে দৌড়ে যায়
চাঁদের স্নিগ্ধ মমতায়
যখন রাতের গভীরতা প্রভাতে পৌছে
তখন চাঁদের মুগ্ধতা অচেনা ঠেকে
মনে হয় বহুকালের পুরানো
বন্ধুত্ব কত দ্রুত নিঃশেষ হয়ে গেলো !


আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে আষাঢ়ে  বৃষ্টি হওয়ার পায়তারা করে
খণ্ড খণ্ড মেঘ ঘনীভূত হয়
সমস্ত আকাশ জুড়ে
ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পরে উদাসীন বৃষ্টি
আমার সমস্ত মন ধুয়ে যায় নিমিষেই
যখন আর মেঘ হওয়ার মতো
অবশিষ্ট কণা থাকলো না
তখন বৃষ্টির আত্মভোলা  ফোঁটা ফোঁটা সৃষ্টি
অচেনা করে দিয়ে হারিয়ে যায়
সমস্ত আকাশে !


আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে জানালার কাঁচে জমে উঠে শিশির
অথবা নকশীকাঁথায় জমে উঠা
মাতাল প্রেম ও থরথর করে কেঁপে উঠে
শীতের আলিঙ্গনে
যখন সময় ফুরিয়ে যায়
তখন শীত ও অচেনা ঠেকে !


আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে বসন্তে কৃষ্ণচূড়া
নতুন নতুন কুঁড়ি মুখ তোলে আকাশ ছুঁতে
যখন বসন্ত দ্রুত  সময়োচিত
যৌবন মুছে ফেলে
তখন বসন্তকে এত ঘোলাটে  মনে হয়
যেন আমি তাকে কখনো-ই দেখিনি !


আমি যখন তাকে দেখি
তখন সে একগুচ্ছ গোলাপ হাতে অপেক্ষারত
তার গৌঢ় পরিণীতা ছবি শুভ্র রেশমে
গুটি গুটি পদক্ষেপে একজন শিল্পী
দীর্ঘ রাতের নির্ঘুম চোখে
এক অদ্বিতীয়া প্রতিমা সৃষ্টি করলেন
প্রেমিক এসে তার হাতের গুচ্ছ গোলাপ ছুঁতে ছুঁতে
কয়েক সেকেন্ডেই শেষ হলো
তাদের নিবেদিত ভালোবাসা
যখন সমস্ত মন তার আদর নিয়ে ফিরছে
তখন দূরত্ব প্রতি কদমে কদমে
সরে যেতে যেতে
অচেনা লাগলো তার গোলাপি চুম্বন !


মেঘদূত
২৯/০৫/২১ ইং
বনানী, ঢাকা ।