ছুঁটছি
ছুঁটতে ছুঁটতে দেখি
অবেলায় গাঢ় উচ্ছ্বাস
চৈত্রের খরপৃষ্ঠের মতো
রুষ্ট হয়ে
পুড়ে গিয়েছে দিনাতিপাত সময় !
  
হাটছি
হাটতে হাটতে দেখি
পায়ে পায়ে জড়িয়ে গিয়েছে
আমার ভবিষ্যৎ প্রণোদনা
গ্রন্থির বিকল তামাশা
উপেক্ষা করে
আমি হেঁটেছি
অনেক অনেক স্বপ্নকে বাঁচিয়ে তোলতে
কিন্তু এখন গাঢ় শূন্যতা
গলা টিপে মারে নিঃসঙ্গতায় !
  
ঘুমাচ্ছি
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখেছি
পৃথিবীর  সবচেয়ে দামি
একটি শিশুর মুখ
ডাস্টবিনের অপাঙ্ক্তেয় জলে
চিৎকারে করে কাঁদছে
মা আমায় নিয়ে যাও
যেই আমি ধরতে গেলাম
স্যাঁতসেঁতে ডোবা জলে
ডুবে গেলো !
  
দেখছি
ভালো মন্দ অনেক দেখে ও
চোখের স্বাদ মিটেনি
যদি আমার দেখা শেষ হয়ে যেতো
বোধোদয় আমি অন্ধ হয়ে যেতাম
কারণ অন্ধ আলোতে অনেক কিছু
দেখার আছে
আর যারা অন্ধ
তাদের ও যদি অনেক অনেক অন্ধ আলো
দেখা হয়ে যায়
বোধোদয় তারা ও চোখ কচলিয়ে
আলোর যাত্রী  হবেন !
  
শুনছি
প্রতিদিন ই শুনছি
শুনতে শুনতে যন্ত্র হয়ে গেছি
এখন আর ভালো খারাপ তফাৎ
করতে পারিনা
মহীরুহের মতো জীবনে
সবচেয়ে বেশি শুনেছি
অপ্রয়োজনীয়  শব্দ ;
ঐ সময়টুকু আমি বেঁচে থেকে
বিষিয়ে তুলেছি
অদ্ভুত আধার !
  
জীবন ছোট হলে ও ক্ষতি নেই
যে জীবন খুব অল্পের
সে জীবনের পূর্ণতা ও অনেক বেশি  ;
আর যে জীবন অনেক বেশি সময়ের
সে জীবনে হাহাকার
সবচেয়ে বেশি !
  

উৎসর্গ :  
আমার বাবাকে ।
যিনি একজন সংগ্রামী মানুষ।
যার শৈশব কেঁটেছে একটি ছেঁড়া হাফ
প্যান্ট এবং মাড় ভাতের ফ্যানে।  আমি এতটাই
সৌভাগ্যবান বাবার শৈশবের মতো দুর্ভাগ্যকে ছুঁতে  
হয়নি ! সে-জন্য জীবনকে এখনও কাছ থেকে দেখতে
পাইনি !


মেঘদূত
পহেলা বৈশাখ,১৪২৮ বাং
বনানী, ঢাকা ।