আমরা আনন্দে উদ্ভাসিত, সোনা ঝরা সকাল--
যখন দীপ্তিময় হয়,
আমরা সুঘ্রাণে মাতোয়ারা,পুষ্পকানন ধীরে ধীরে
যখন প্রস্ফুটিত হয়।
আমরা ষড় ঋতুর মাঝে বসন্তকে--
সর্বোচ্চ মর্যাদা দেই, তাকে বরণ করি,
কবি হৃদয়ের সমস্ত প্রেম-ভালোবাসা,
কবিতা আর সুরের মুর্ছনা দিয়ে।


আমরা চাঁদকে সুন্দরের প্রতিক মনে করি
আদর করে তাকে মামা ডাকি,
পূর্নিমা তিথিতে চাঁদ এতোই উজ্জ্বল হয়
মনে হয় তাকে আমাদের চাই-ই চাই।


আমরা বিশাল শূন্যের মাঝে-
সাত রঙে রাঙা রংধনুকে প্রত্যক্ষ করি,
যখন কোন সুন্দর স্বাস্থ্যবান দীর্ঘকায় মহাপুরুষ
অথবা অস্থির দূরন্তপনা যৌবন তাড়নায় উদ্দীপ্ত
কোন সুন্দরী নারী,
অপলক দৃষ্টিতে চোখের দিকে তাকিয়ে
যখন ভালোবাসার ছাপ অঙ্কন করে।
কমলা রাঙা নরম ঠোঁটে মৃদু হাসি ঝরে পড়ে
সাথে সাথে ঝরে পড়ে
দুটি চোখের পাতা।
তখনও আমরা একইভাবে আনন্দিত হই
মনে হয় এইতো সেই,
হাজার বছর ধরে খুঁজে চলেছি যাকে
অক্লান্ত প্রথিকের মত পৃথিবীর প্রতিটি পথে পথে।


তবে মনে রাখা উচিত সোনা ঝরা সকালের পরে,
সন্ধ্যার অন্ধকার আলোকিত ধরনীকে ম্লান করবেই।


আর ফুল?
সেতো সুবাস ফুরিয়ে গেলে
আস্তে আস্তে পাঁপড়িগুলো শুকিয়ে গেলে,
নীরবে ঝরে পড়ে।
তখন যতটা না মানায় ফুল বাগানে
তার চেয়ে বেশি ডাস্টবিনে।


আবার বসন্ত বাতাস আমাদের পাগল করে
দেয় অনাবিল শান্তি,
কিছু দিন পর ঘুরে ফিরে
অযথায় ক্ষোভ অভিমান করে
তুলে দেয় শ্বাসরুদ্ধকর কালবৈশাখীর হাতে।
তেমনি উজ্জ্বল আদরের চাঁদ মামাও হঠাত লুফে নেয়
তার সমস্ত আলো, ঠেলে দেয় আমাদের,
অমাবশ্যার ভয়ংকর জমকালো অন্ধকারের সমুদ্রে।


আবার বিস্তৃত আকাশে আমরা যে-
রংধনু প্রত্যক্ষ করি সেটাও স্থায়ী নয়,
চোখের পলকে তার সাত রং কে ম্লান করে
ছড়িয়ে দেয় ধূসর মেঘ মুহূর্তের মধ্যে।
সব কিছুতে আজ অবিশ্বাসের ছাপ
তেমনি নারীর প্রতিও জন্ম নিয়েছে-
পুরুষের অনাকাঙ্ক্ষিত অবিশ্বাস
সেখানে তো মন ভাঙাটায় স্বাভাবিক।


আর নারী?
সেতো আজ বড়ই ক্ষমতাশীল,
একটি সূর্য যেমন সারা বিশ্বকে আলোকিত করে
নারীতো চাইবেই তাঁর রুপের ঝলকানিতে,
শত পুরুষের হৃদয়ে শিহরণ জাগাতে
জ্বালিয়ে দিতে প্রেমের অগ্নিতে।
সূর্য যেমন মাঝে মাঝে চৌত্র সৃষ্টি করে
ভূপৃষ্টকে করে চলার অনুপযুক্ত,
নারীতো চাইবেই সূর্যের মত সন্ধ্যায় মিশে গিয়ে-
পুরুষের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত, চৌচির করতে।


তাহলে কিছুই তো নেই অস্বাভাবিক
সবই তো আছে ঠিক-ঠাক।
তাহলে আজ কেন এতো-
বেদনার পাহাড় থেকে
ঝরনার অবিরাম জলরাশি
দুঃখের শত শত নদী বেয়ে
কষ্টের মহাসমুদ্র সৃষ্টি করছে?
কেনই বা ভাঙছে অজস্র মন?


রচনাকাল: ০৩।০৪।২০১৪ ইং
উৎসর্গ: বন্ধু জাহাঙ্গীর আলম কে।
দৈনিক চাপাঁই দর্পণ, ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ইং