এইতো সেদিনও ছিলি-- গ্রামে ছিলি,
শহরে ছিলি, ঘরে ছিলি, বাইরে ছিলি,
বাড়ির পাশের রাস্তার মোড়ে, খুব ভোরে কুয়াশার মধ্যে ফসলের ক্ষেতে
আমাদের বাড়ির পাচিলের ওপাশে হাঁটার শব্দে শব্দে ছিলি।
কখনও দাঁড়িয়ে ছিলি, দোকানে বসে ছিলি,
কখনও কথা বলছিলি, নীরব ছিলি
অথবা উত্তেজিত ছিলি, ছিলি তো!
হঠাৎ নেই
হঠাৎ-ই নেই কেন?
খুব অভিমান ছিলো তোর?
খুব বিরক্তিতে ছিলি তুই?
নাকি ফাঁকি দিতেই এসেছিলি?
এসেছিলিই যখন হঠাৎ নেই হলি কেন?
তোর চোখের রঙে তো কখনও এমনটা দেখিনি
তোর হাঁটাচলা, তোর কথা-বার্তায় এমনটা বুঝিনি।


রঙধনুর মতো এসেছিলি সবার জীবনকে রাঙাতে
রাঙিয়েও গেলি, তবে সাতরঙে নয়
কালো রঙে রাঙিয়ে গেলি;
কাঁদিয়ে গেলি, হঠাৎ কাঁদিয়ে গেলি আমাদের
কাঁদিয়ে গেলি বাগডাঙ্গার আকাশ, বাতাসে নির্লিপ্ত অক্সিজেনকেও।
ভাসিয়ে গেলি তোর বোন, তোর মায়ের আঁচল
তুই দেখছিস কিনা জানি না, তোর বোনের
তোর মায়ের স্নেহময়ী আঁচল আর শুকাচ্ছে না
বিশ্বাস কর, আর কখনও শুকাবেও না
তোর বাবা খুব অভিমানী ছিলো তোর উপর
তুইও না বুঝে অভিমান করতিস,
জানিস? তোর বাবার আর বিন্দুমাত্র অভিমান নেই
তোর শোকে, তোর নীরবতায়, তোর চলে যাওয়ায়
তোর হঠাৎ নেই হওয়াতে।


তোকে তো কিছু দিতে পারিনি আমরা
তুই-ই দিয়ে গেছিস যেগুলো দেওয়ার ছিলো,
এখন আর দিতেও পারবো না, শুধু তোর মায়ের একজোড়া শত সমুদ্রসম চোখের পানি,
আর আমাদের শতজোড়া চোখের অশ্রুফোটাগুলো শিরিরে ঝরিয়ে দেবো প্রতিদিন।
সেখান থেকে ধরে নিস
ভাতিজা রসুল তুই ভালো থাকিস।


রচনাকাল: ০৪।১২।২০১৮ ইং