কোথা গেলো সেসব স্মৃতি, গাঁয়ের পথের গরুর গাড়ি
চলার পথে দেখতাম তখন শনের ছাউনি কত বাড়ি,
গাঁয়ে ছিল ছোট বড় পুকুর, দীঘির পাড়ে তাল গাছ
আগের মতো নেই এখন বিল-ঝিলে সুস্বাদু ছোট মাছ।


খালি পায়ে রাখাল বালক ছুটে চলতো মাঠের পানে
গ্রাম্য কৃষক কাজের ফাঁকে দুঃখ ভূলতো উদাস গানে,
নদীতে ছিল নৌকা বাইচ বসতো কত রঙের মেলা
হারিয়ে গেছে সেসব দিনের কত শত মজার খেলা।


পালকি করে চলতো বঁধু পাড়িয়ে যেতো মাঠ-ঘাট,
নদীর বুকে মাঝি-মাল্লা বেয়ে যেতো নৌকার দাঁড়।
ধান ভানার ঢেকি কিংবা খেজুর পাতার সেই পাটি,
কালের গর্তে হারিয়ে গেছে নেই মাটির কলস-বাটি।


যায়না পাওয়া খুঁজে এখন ডুলি নামের সেই বাহন
গ্রাম্য বঁধুর হাতে এখন যায়না দেখা প্রিয় কাঁকন,
ধান কুড়িয়ে খই ফোটাতো গ্রামের দূরন্ত কিশোর
ভোর হলেই শোনা যেত কুরআন পড়ার সেই সুর।


’হুক্কা’ এখন বদলে গেছে খড়মও নেই কারো পায়ে
কুপি জ্বালানো রাত কী এখন দেখা যায় কোন গাঁয়ে?
মেহমান আসলে পিড়ি দেয়ার নেইতো আর রেওয়াজ
মাথাল মাথায় কৃষক রোদ-বৃষ্টির করতোনা তোয়াজ।


পুঁথিপাঠের আসর সব কোথা যে গেল আজ হারিয়ে
গাজী-কালু, সোনাভান পড়ার মতো নেই যে পড়িয়ে,
ফেরিওয়ালার হাওয়াই মিঠাই কিংবা গুড় মাখা মুড়ি
এখন কেউ গল্প করেনা চাঁদে আছে সুতাকাটা বুড়ি।


সাপের খেলা, বানর নাচ যায়না দেখা গ্রামের পথে
গ্রাম যে এখন গ্রাম নেই চড়েছে আধুনিকতার রথে,
লুড়ো, কাবাডি, ডাংগুলি, বউচি কিংবা কানামাছি
সব ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে সবাই এখন যান্ত্রিকতায় বাঁচি।