এখন এই পড়ন্ত যৌবনে,
নিজেকে প্রৌঢ় বা বৃদ্ধ বলাই ভালো,
ভালোবাসার ছোট্ট সাম্পানে চড়ে সমুদ্রসঙ্গমে ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে হলো;
টেকনাফের নাফনদী, মহেশখালীর বাঁকখালী-মাতামুহুরী অথবা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মোহনায় মোহনায়।
তুমি কাছে ডাকলে।
নিজে থেকেই মাঝি হতে চাইলে যৌবনবতী কলাবতী সুশ্রী রমণী।
তোমার চোখের ইশারায় দুলে উঠলো শরীর।
জোয়ারের পানিতে আগুন জ্বালালে মধুকরী সম্মোহনী শক্তির জোরে।
আমি যাদুটোনায় আক্রান্ত পাগলের মতো নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রলাপ বকি আর তোমার নাম নিই।
লজ্জাশরম কোথায় পালালো!
সাম্পানে উঠার নেশায় ঘাটে বসে থাকি।
দিন যায়, রাত যায়।
সপ্তা যায়, মাস যায়।
বসেই থাকি।


হঠাৎ হাজির হও।
নানান বায়না থাকে তোমার।
তোমার ইচ্ছায় পাহাড়ের চুঁড়া দেখি, ঢেউ গুনি, ডুব দিয়ে নদীর গভীরতা মাপি।
পানিতে ভিজি, রোদে শুকাই।
ইচ্ছে হলেই ঘাটে সাম্পান রেখে হুটহাট চলে যাও।
শীতের রাতে অথবা দিনেও ঘাটে বসে কনকনে ঠান্ডা বাতাসে ঠকঠক করে কাঁপি।
আর অপেক্ষায় থাকি, কখন আসবে, কখন ডাকবে আমায়।
কখনও আবছায়ায় তোমাকে পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে  দেখি।
ডাক দিই 'লক্ষ্মী সোনা' বলে।
শুনো কি শুনো না, ফিরেও তাকাও না।
আমার খুব কষ্ট হয় তখন।
আবার এসে হাজির হও।
আনন্দে আপ্লুত হই।
তোমার ইচ্ছেমতো সমুদ্রদর্শনে সাম্পানে উঠি।


সেবার যে গেলে, আর আসোনি।
শীতশেষে বসন্ত আসবে।
তুমি আর আসবে কিনা জানি না।
তোমার অনেক নওজোয়ান বন্ধু আছে।
বসন্তের হাওয়া তাদেরই মানায়।


রচনাকাল: ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮