মানুষেরও ক্ষুধা লাগে;
প্রচণ্ড ব্যাথা হয় পেটে। জাগে
তৃষ্ণা দুই ঠোঁটে;
পিপাসার্ত মানুষ ছুটে
টিউবওয়েল পাতকুয়া ঝর্ণা নদী খাল বিল সরোবর খুঁজে খুঁজে।
বুঝে না বুঝে
পান করে পানি, দুষিত হলেও; অবশেষে
অখাদ্য কুখাদ্য খায়, গড্ডালিকার প্রবাহে যায় ভেসে।
কুকুর অথবা বিড়ালের মতো
কতো
মানুষকে দেখেছি নর্দমার পাড়ে কিংবা আস্তাকুড়ে;
সেখানে ভনভন করে মাছি উড়ে।


অথচ এমন হওয়ার তো কথা নয়;
দুঃসময়
চলছে এখন।
কাজ নেই, স্থবির ব্যবসা, লকডাউন যখনতখন;
চলে না রিক্সা, গাড়ি, বন্ধ কলকারখানা।
অজ্ঞাত অচেনা অজানা
অদৃশ্য ক্ষুদ্র জীবকণা অজান্তেই হানা দেয় নিশ্বাসের সাথে;
মরে যায় কিছু আক্রান্ত মানুষ। অনেক মানুষ মরে অপঘাতে
ক্ষুধার জ্বালায়;
বৌবাচ্চা নিয়ে সংসার কিভাবে চালায়!


মরছে মানুষ ইঁদুরের মতো;
শেষকৃত্যে মানুষের লাশ লক্ষ হাজার শত শত।
মানুষ মানুষ নেই আর;
কিছু নিস্তেজ নির্জীব ক্লীব আর কিছু লোভী হিংস্র জানোয়ার।
একটা মহামারী
বদলে দিয়েছে আজ 'মানুষ' নামের সংজ্ঞাটুকু; তারই
নির্মম প্রকাশ এই মৃত্যু বিভীষিকা।
রাজটীকা,
তিলক পড়েছে কিছু লোক;
দুঃখ আর শোক
কিছু মানুষের ললাটে লাল অক্ষরে লিখা।
জীবনের যবনিকা
ঘটে নিমিষেই;
ফুসফুসের ভিতরে থাকা সেই
ক্ষুদ্র জীবকণা বিধ্বংসী হয়ে উঠে।
নীরবে অস্ফুটে
যে যায় সে যায়, রেখে যায় দায়, ঋণ।


লকডাউনের ডামাডোলে কর্মবিহীন
মানুষেরা কুকুর কিংবা বিড়ালের মতো অনাহারী থাকে;
তাকে
রাষ্ট্র সমাজ অথবা পরিজন কতোদিন পারে অন্ন বস্ত্র দিতে!
আচম্বিতে
আত্মাহুতি দেয় দায়গ্রস্ত অনেক মানুষ;
এই পৃথিবীর আকাশে বাতাসে ভাসে রঙিন ফানুস!
এই পরাজয়
শুধু কোনো একজন দুজন বা অগুনতি মানুষের নয়।
এই দুর্ভাগ্য শুধু সৃষ্টিরই সৃষ্ট নয়, স্রষ্টারও দায় আছে;
শুধাবোই যদি তাঁকে পাই কাছে।


রচনাকাল: ঢাকা, ০২ জুন ২০২১।