তুমি এলে।
পাড়া বেড়ালে।
খোঁজ করলে রহিমা খালার।
মানু পিসির গেটোবাতের খবর নিলে।
করমালীর বৌর বাচ্চা হবে, সাত মাসের পোয়াতি;
মাকে বলে ঘরে ডেকে এনে 'সাত' খাওয়ালে।
নিজের চুলের ফিতা আর ক্লিপ উপহার দিলে বাল্য বান্ধবী অঞ্জনাকে।
সখী রোমেনার ছোট্ট ফুটফুটে ছেলেটাকে কোলে নিয়ে এবাড়ি ওবাড়ি ঘুরলে।


দেখতে গেলে না মিয়াবাড়ির বকুল গাছে ফুল ফুটেছে কিনা!
পাড়ার মোড়ে বটগাছের ছায়ায় ঠাণ্ডা বাতাসে গায়ের ঘাম শুকোতে গেলে না।
বিকেলে পুকুরপাড়ে শানবাঁধানো ঘাটে একবারও বসলে না।
পুকুরে লালপদ্ম ফুটেছে কিনা জানতেও চাইলে না কারো কাছে।
ধবধবে সাদা যে বিড়ালটা রোজই জানালা দিয়ে তোমার ঘরে ঢুকতো,আর তুমি গায়ের ওমে তাকে উত্তাপ দিতে; সে বেঁচে আছে না মরে গেছে খোঁজ নিলে না একবারও।


এতোটাই বদলে গেলে!
অনেক বড়ো হয়ে গেছো, না?
কাজের চাপ বুঝি খুব?
সে মানুষটিকে ভুলে গেলে, যে ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতো সবসময়।
ভুলেও তার আঙিনায় পা রাখলে না।
জানতেও চাইলে না সে ভালো আছে কিনা।
এতোটাই বদলে গেলে!
নাকি অজানা ভয়ে এড়িয়ে চলো সবকিছু।
বিস্মৃত হতেই বুঝি একদার সব প্রিয় জায়গাগুলো থেকে দূরে থাকা?
প্রাক্তন প্রাণপ্রিয় মানুষটিকে মনে রাখতে চাও না।
কিন্তু কখনোই পারবে না।
যতোই দুপায়ে মাড়াতে চাইবে সব, ততোই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাবে।
ভুলতে পারবে না বাল্যস্মৃতি, প্রথম প্রেম।
অহর্নিশি দগদগে ঘায়ের মতো যন্ত্রণা দেবে বুকে।
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে না কখনো।


রচনাকাল: ঢাকা, ২৪ নভেম্বর ২০১৮