কোন একদিন দেখি,
কালোমেঘের কুৎসিত আকাশ
প্রচন্ড বেগে ছুটছে হাওয়ার দল।
দিনভর আকাশের বুকছেরা কান্নার রূপও বদলে গেছে এখন-
বর্ষাজল হয়ে গেছে অশ্রুপাথর।
ভূমিবীর বৃদ্ধতরুরাও শির নত করে হেলিয়ে পড়ছে দিগ্বিদিক।
প্রচন্ড ঝড়-হাওয়া, বুঝলাম এ কালবৈশাখী।


লালইটে গড়া অট্টালিকার পাশেই ছিল ঝরঝরে কুড়েঘরখানা।
আড়াল থেকে দেখলাম,
অট্টালিকার লাল ইটের মুখে আকাশী অশ্রুপাথর ভাঙ্গার জয়ী আনন্দ
আর কুড়েঘরে দন্ডায়িত ঘুনেধরা বৃদ্ধবাঁশের খুটির ফ্যাকাসে মুখের ভয়ার্ত দৃষ্টি!
অবাক করল আমায়,
অট্টালিকার শিনাটানে বিভক্ত হয়ে ছিটকে সরে যাওয়া ঝড়ের হাওয়া
আর নিরীহ বৃদ্ধ ঘুনেধরা বাঁশের খুটির খটমট করে ভূপাতিত হওয়ার দৃশ্য!
লক্ষ্য করেছি,
শেষের ওই খটমট শব্দটি লালইটের অট্টালিকাকেই করেছিল, ঘুনেধরা বাঁশের খুটি।


বহুদিন পর,
সেই ঘুণেধরা বাঁশের খুটির জীবাশ্মও আজ হয়তো নেই।
কবেই মাটির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে।
হঠাৎ দেখি,
ঝড় উঠেছে! ঝড়, কিন্তু সেটা আকাশ কিম্বা বাতাসে নয়।
মাটির বুকে, মাটির বুকে কম্পমান ঝড়।
একদিন যে অট্টালিকার তৃষ্ণামিটেছিল আকাশের অশ্রুপাথর ভেঙ্গে।
যার আঘাতে ঝড়ের হাওয়া হয়েছিলো দু’খন্ডিত।
আজ ভূমিকম্পের কম্পনে তার একি নড়বড়ে অবস্থা!
অবাক হয়ে দেখলাম,
ভূমির বুকে উৎসবের মহানৃত্য আর লালইটে গড়া অট্টালিকার ধসে পড়ার দৃশ্য!
হঠাৎ মনে পড়ল আমার,
সেই ঘুনেধরা বৃদ্ধবাঁশের খুটির অট্টালিকাকে করা শেষ আর্তনাদের ‘খটমট’ শব্দটি।
সেটা কি নিছকই আর্তনাদ ছিল নাকি অভিশপ্ত ক্ষোভ?