চোখ খুলে একবার তাকিয়ে দেখিস প্রিয়তমা,
তোর জন্যেই জীবনযৌবন দাঁড়িপাল্লায় মেপে বিকিয়েছিলাম।
তোর জন্যেই রক্তজল করে অর্থের পেছনে ছুটে চলা অথর্বের মতো।
তোর জন্যেই ছুটেছি জীবন নামের পাগলা ঘোড়ায় সওয়ারি হয়ে।
তোর জন্যেই বেঁধেছিলাম স্বপ্নের গাঁথুনিতে গায়ের চামড়ায় সুসজ্জিত ঘর।


তোর চুলের খোঁপার গন্ধে যখন আমার ঘুম আসতো না দূরপরবাসে,
তখন সেই চুলের সুগন্ধিকে পরজীবী খেয়েছে রাতভর।
যে বুকের মধ্যে তুই খুঁজতিস তোর সব জনমের পূর্ণতা
সেই আমার ধূসর বুক এখন সাহারা মরুভূমি-
এখন তুই জল খুঁজিস অন্য কারুর বুকে।


তুই কেন অন্য পুরুষের শিশ্নকে আলিঙ্গন করে নিলি সে উত্তর আমার জানা নেই।
তুই কেন আমার যাপিত জীবনের সবটুকু প্রাপ্তিতে পাথর চাপালি সে প্রশ্ন আমি তোকে করি নি।
আমি শুধু অনুনয় করে বিচার চেয়েছিলাম রাষ্ট্রের কাছে।
আমি শুধু আমার বিক্রিত, ধূলিসাৎকৃত স্বপ্নসমূহের দোহাই দিয়ে তোকে জাতির কাঠগড়ায় দেখতে চেয়েছিলাম।


কিন্তু তুই কি জানিস প্রিয়তমা?
৪৯৭ ধারায় তোর কোন বিচার নেই।
তুই এ রাষ্ট্রে ইচ্ছেমতো অন্যের বিছানা গরম করবি,
এর জন্যে তোকে সোনাগাছির গণিকাদের একজন হতে হবে না।
তুই কি জানিস প্রিয়তমা?
তুই পেয়ে যাবি অগণিত সমর্থকগোষ্ঠী।
একজন প্রতারিত স্বামীর অশ্রুজল এ রাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত অপাংক্তেয়।
একজন বিচারপ্রত্যাশী অসহায় স্বামী এখানে নারী নির্যাতন মামলার আসামী।


অথচ আমি তোর প্রেমেই বারংবার পড়তাম,
তোর মণিরত্নখচিত মায়াভরা চোখে আমি কখনো বেশ্যার রিরংসা দেখি নি।
তোর কুসুমকোমল স্তনযুগলে ব্যাঘ্রনখের আঁচড় আমি স্বপ্নেও ভাবি নি।
অথচ তোর সেই চোখ, মুখ, ঠোঁট, গ্রীবায় তুই লালন করেছিস অন্য পুরুষকে।
তোর লিপ্সার দাবানলে পুড়িয়েছিস আমার আজন্মলালিত শেকড়বাকড়।


আজ তোর সমস্ত পাপের পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে আবেদন করছি সাত আসমানের অলীক আদালতে।